শনিবার, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৫

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা বাতিল ও হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

চবি প্রতিনিধি – মেহেদী হাসান

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীরা পোষ্য কোটা বাতিল এবং জুলাই বিপ্লবে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে তারা জড়ো হয়ে বিভিন্ন স্লোগানে মুখরিত করে আন্দোলন চালিয়ে যায়।

শিক্ষার্থীরা স্লোগানে বলেন, ” ফরহাদের ক্যাম্পাসে, পোষ্য কোটার ঠাঁই নাই”; “পোষ্য কোটার ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না”; “সন্ত্রাসীদের আস্তানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না”; “তরুয়া-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ”; এবং “জনে জনে খবর দে, পোষ্য কোটার কবর দে”।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন গতকাল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় পোষ্য কোটা ৩% থেকে কমিয়ে ১.৫% করার প্রস্তাব করলেও শিক্ষার্থীরা এতে অসন্তুষ্ট। তাদের দাবি, পোষ্য কোটা সম্পূর্ণরূপে বাতিল করতে হবে। শিক্ষার্থীরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, “পোষ্য কোটা যদি ০.০০০০০১ শতাংশও রাখা হয়, তাহলে আমরা কঠোর আন্দোলনে নামব।”

শিক্ষার্থীরা জুলাই বিপ্লবে শহীদ তরুয়া হত্যার ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতেও সরব। তারা অভিযোগ করেন, “অভিযুক্তরা এখনও ক্যাম্পাসে অবাধে চলাফেরা করছে।”

নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, “পোষ্য কোটা রেখে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে। যদি আগামীকাল দুপুর ১২টার মধ্যে কোটা বাতিল না হয়, তবে আমরা আমরণ অনশনে যাব।”

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আরেফিন বলেন, “জুলাই বিপ্লবের পর বাংলাদেশে কোটা ব্যবস্থার কোনো যৌক্তিকতা নেই। এটি শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানি।”

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শাহাদাত হাসান সুপ্ত বলেন, “এতদিনেও হত্যার বিচার হয়নি। পোষ্য কোটা রেখে আমরা আর কোনো বৈষম্য মেনে নেব না। এটি শিক্ষার্থীদের প্রতি প্রহসন।”

গতকাল শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী শহীদ হৃদয় তরুয়া হত্যায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগের নিষিদ্ধ কর্মী সাজ্জাদ হোসেনকে পুলিশে সোপর্দ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে শিক্ষার্থীদের দাবি, এই ঘটনা একটি বিচ্ছিন্ন পদক্ষেপ মাত্র। হত্যাকারীদের পুরো চক্রের বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

শিক্ষার্থীরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, প্রশাসন যদি দ্রুত পোষ্য কোটা বাতিল এবং হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত না করে, তাহলে তারা আরো কঠোর আন্দোলনে নামবে। আগামীকাল দুপুর ১২টার মধ্যে তাদের দাবি পূরণ না হলে তারা আমরণ অনশনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে উত্তেজনা তৈরি করেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ না নেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে বলে জানানো হয়েছে।

সর্বাধিক পঠিত