শনিবার, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৫

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ; অবশেষে ভাঙছে চাকসুর অচলায়তন

চবি প্রতিনিধি
৩৬ বছরের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। আগামী ১২ অক্টোবর, বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে অনুষ্ঠিত হবে গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণের এ মহোৎসব। বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন।
এ সময় চাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. এ কে এম আরিফুল হক সিদ্দিকী এবং নির্বাচন পরিচালনা কমিটির অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনের সময়সূচি:
খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ: ১ সেপ্টেম্বর
আপত্তি গ্রহণ: ২, ৩ ও ৪ সেপ্টেম্বর
চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর
মনোনয়নপত্র বিতরণ: ১৪, ১৫ ও ১৬ সেপ্টেম্বর
মনোনয়নপত্র জমা: ১৫, ১৬ ও ১৭ সেপ্টেম্বর
মনোনয়ন যাচাই-বাছাই: ১৮ সেপ্টেম্বর
প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর
মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময়: ২৩ সেপ্টেম্বর বিকাল সাড়ে ৩টা
আপত্তি গ্রহণ ও নিষ্পত্তি: ২৪ সেপ্টেম্বর বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত
প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর
ভোট গ্রহণ: ১২ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত
ফলাফল ঘোষণা: ভোটগ্রহণ শেষে একই দিনে
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন বলেন, “বহুল প্রতীক্ষিত এই চাকসু নির্বাচন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে একটি মাইলফলক। এ পর্যন্ত মাত্র ছয়বার চাকসু নির্বাচন হয়েছে এবং এর আগের তিনটির সঙ্গে আমি সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলাম। এবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া আমার জন্য গর্বের।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির তত্ত্বাবধায়ক অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “৩৬ বছরের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবার একটিই প্রত্যাশা— একটি সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন।”
নির্বাচনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব বিকাশের নতুন দ্বার খুলবে বলে আশা করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। অনেকেই মনে করেন, একটি কার্যকর ছাত্র সংসদ প্রতিষ্ঠা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক স্বচ্ছতা, শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষা এবং নেতৃত্ব চর্চা নিশ্চিত হবে।
উল্লেখ্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬৬ সালে। প্রথম চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৭০ সালে। নিয়মিতভাবে প্রতি শিক্ষাবর্ষে এই নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও, নানা প্রতিবন্ধকতায় বিগত ৩৬ বছরে আর কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। সর্বশেষ নির্বাচন হয় ১৯৯০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। এরপর ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব, সংঘর্ষ এবং অনুকূল পরিবেশের অভাবে নির্বাচন স্থগিত থাকে।
বর্তমানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯টি অনুষদ, ৪৮টি বিভাগ ও ৬টি ইনস্টিটিউট রয়েছে। মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ২৮,৫১৫ জন। খসড়া ভোটার তালিকা অনুযায়ী ৫৪টি বিভাগে ২৫,৭৫২ জন শিক্ষার্থী ভোটার হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছেন, যা এখনও চূড়ান্ত নয়।

সর্বাধিক পঠিত