বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১১, ২০২৫

উখিয়া থানার ‘ইয়াবাকান্ডে’ জেলা পুলিশের তদন্ত কমিটি, শাস্তি নাকি বদলি?

নিজস্ব প্রতিবেদক

কক্সবাজারের উখিয়া থানা পুলিশের অভিযানে অর্থের বিনিময়ে মাদক কারবারিকে ছেড়ে দিয়ে নিরীহ কর্মচারিকে ফাঁসিয়ে দেওয়া ও জব্দকৃত ইয়াবা সংখ্যায় কম দেখানোর অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা পুলিশ।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) অলক বিশ্বাস।

তিনি বলেন, ‘ গণমাধ্যমে বিষয়টি সামনে আসার পর জেলা পুলিশ অভিযোগকে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে এবং কমিটিকে দ্রুত সময়ে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিভাগীয় মামলা সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ‘

তদন্ত কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উখিয়া সার্কেল) রাকিবুল হাসান জানান, ‘ সিসিটিভি ফুটেজ যাচাই থেকে শুরু করে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট সব তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। খুব শীঘ্রই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।’

গত ৭ ডিসেম্বর জাতীয় দৈনিক যুগান্তরে ‘কক্সবাজারে ইয়াবাকান্ডে জড়িত ৫ পুলিশ’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ পেলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

প্রতিবেদনে প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী,  গত ৩০ নভেম্বর উত্তম কুমার বিশ্বাস নামের এক ব্যক্তি আটক করেও তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং দোকান কর্মচারী হারুনুর রশীদকে ৬০০ পিস ইয়াবা দিয়ে জেলহাজতে মাদক মামলার আসামী করে পাঠানো হয়।

জড়িত ৫ পুলিশ সদস্য হলেন – মামলার বাদী এসআই সঞ্জিত কুমার মন্ডল, এসআই ফরহাদ রাব্বী ঈশান, কনেস্টবল লিমন, মাহবুব ও শরীফ।

ছায়া তদন্ত কেন্দ্রিক অসমর্থিত সূত্র বলছে, এসআই ঈশানের প্ররোচনায় অন্য সদস্যরা তাকে সহযোগিতা করেন এবং অবৈধভাবে আয় করা অর্থের ভাগ নেন।

সেই সূত্রের দাবী, ঈশানকে ইয়াবা বিক্রি ও অর্থভাগে সহায়তা করেন কনেস্টবল লিমন এবং অভিযানে অংশ না নেওয়া অপর এক পুলিশ সদস্য।

অভিযুক্ত ঈশান এর আগে চকরিয়া থানা থেকে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে প্রত্যাহার হয়ে উখিয়া থানায় আসেন। উখিয়ায় এসে স্বভাব না পাল্টানোয় অল্প কদিনের মধ্যে তাকে কুতুবদিয়ায় বদলি করা হয়।

কিন্তু সদ্য সাবেক ওসি জিয়াউল হকের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে উখিয়ায় এখনো তিনি রয়ে গেছেন এবং বদলি আদেশের পরও অভিযানে যোগ দিয়ে ইয়াবাকান্ডের মতো নেক্কারজনক ঘটনার অবতারণা করেন।

ঈশানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও সংযোগ মিলেনি, তবে আলোচিত অভিযানের একদিন পরই তিনি ছুটিতে যান বলে থানা সূত্রে জানা গেছে।

বাদী এসআই সঞ্জিত জানান, মামলার এজাহারের বাইরে কোনো কথা বলতে পারব না। নিষেধ রয়েছে।

এদিকে এর আগেও ইয়াবাকান্ডে জড়িয়ে সাবেক পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহ কক্সবাজার থেকে বদলি হয়েছিলেন।

এখন দেখার বিষয়, অভিযুক্তরা কি বদলি হচ্ছেন নাকি দৃষ্টান্ত তৈরি করা শাস্তির মুখোমুখি হচ্ছেন?

সর্বাধিক পঠিত