
মেহেদী হাসান মেহের বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
প্রভাতের শিশির ভেজা ঘাস আর ঘন কুয়াশার চাদরে ভেজা হেমন্তের শেষে শীতের আগমনের বার্তা জানিয়ে দিচ্ছে আমাদের। শীতের আমেজ শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই গাছ থেকে খেজুরের রস সংগ্রহের কাজে ব্যতিব্যস্ত হয়ে উঠেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের গাছিরা।
কার আগে কে কত বেশি পরিমাণ রস সংগ্রহ করবেন, এই প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েছেন তারা। কারণ শীতের সকালে খেজুর রস খেতে বিভিন্ন গ্রাম থেকে লোক এসে ভীর জমায় গাছিদের এলাকায়। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে খেজুর গাছ থেকে গাছিদের রস সংগ্রহ করতে দেখা গেছে।
এর মধ্যে অন্যতম এলাকা হলো বাঞ্ছারামপুর উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের শেকেরকান্দি গ্রামে, এই গ্রাম খেজুরের রসের কারণে বেশি পরিচিত।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস নদ বিধৌত উপজেলা বাঞ্ছারামপুর। যেখানে নভেম্বরের শেষ কিংবা ডিসেম্বরের শুরুতে মেলে সুস্বাদু খেজুরের রস। খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করতে হলে প্রথমে খেজুর গাছের মাথা ভালো করে পরিষ্কার করে সাদা অংশ কেটে রোদে শুকিয়ে আবারও কেটে নলি লাগিয়ে ছোট-বড় বাসন রাতে বেঁধে সকালে রস সংগ্রহ করা হয়।
এ রস অনেকে হাট-বাজারে খাওয়ার জন্য বিক্রি করেন।আবার কেউ জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরি করেন। শীতকালীন খাদ্য তালিকায় প্রথমেই আসে খেজুরের রস। শীত ও খেজুরের রস যেন ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিল। শীত
যত বাড়ে খেজুরের রসের চাহিদাও ততো বাড়তে থাকে। গ্রাম্য এলাকায় ঘরে ঘরে এই রস দিয়ে তৈরি হয় নানা ধরনের পিঠাপুলি। কিন্তু তুলনামূলক ভাবে আগের থেকে অনেক কমে যাচ্ছে খেজুরের রসের চাহিদা। এই নিয়ে উজানচর ইউনিয়নের শেকেরকান্দি
গ্রামের অনেক জন থেকে জানা যায় , গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য খেজুর রস সংগ্রহে শীতকালে প্রতিটি গ্রামে গ্রামে গাছিরা খেজুরগাছ কাটার কাজে ব্যস্ত সময় পার করতেন। আগে যেখানে আমাদের গ্রামে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০টা গাছ কাটা হতো সেখানে বর্তমানে ১৫-২০ টা গাছ কাটে গাছিরা। আস্তে আস্তে গ্রাম থেকেও উঠে যাচ্ছে অনেক বিশেষ বিশেষ খাবার।