প্রিন্ট এর তারিখঃ ডিসেম্বর ১, ২০২৫, ১:১৩ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৫, ১১:৪৬ পূর্বাহ্ণ
চকরিয়ায় দালাল না ধরলে নড়ে না পুলিশ, ভোগান্তিতে সেবাগ্রহীতা
চকরিয়া প্রতিনিধি
কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানায় হঠাৎ বেড়েছে টাউট, বাটপার ও দালালের দৌড়াত্ম্য। অভিযোগ রয়েছে দালাল না ধরলে পাওয়া যায় না সেবা। এমনকি দালালদের মাধ্যমে থানায় নিয়মিত সালিশ বসাচ্ছে পুলিশ। সেখানে অর্থ আত্মসাৎসহ জায়গা-জমি দখল ও দখলমুক্ত করতে বিচার করা হচ্ছে চুক্তির বিনিময়ে।
অভিযোগ রয়েছে, ফ্যাসিস্ট সরকারের মদতপুষ্ট একজন পুলিশ কর্মকর্তা এখনো চকরিয়া থানায় কর্মরত। তিনি পুলিশকে বিতর্কিত করতে নানা অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। অভিযোগ আছে, থানার এএসআই, এসআই তাদের নিজস্ব দালাল রয়েছে। দালালরা প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয় সমাধানে সেবাপ্রার্থীদের সঙ্গে অর্থের চুক্তি করে পছন্দের পুলিশ অফিসার দিয়ে থানায় প্রায় নিয়মিত সালিশ বসাচ্ছেন। বাদী-বিবাদী উভয় পক্ষকে থানায় ডেকে ইচ্ছেমতো দেওয়া হয় রায়।
সেবাপ্রার্থীদের অভিযোগ, থানার সামনে উৎপেতে থাকে দালালচক্র। থানায় কোনো সেবাপ্রার্থী আসলেই দালালরা সর্বপ্রথম তাদের থেকে জিজ্ঞেস করে কী করবেন জিডি না অভিযোগ না মামলা করবেন। সেবাপ্রার্থীদের সঙ্গে কথা কাজে মিল পেলে সোজা চলে যায় থানার আশপাশে কম্পিউটার দোকানে। সেখানে গিয়ে মামলা বা অভিযোগ লেখার বা কম্পিউটার খরচের কথা বলে দালালচক্রটি হাতিয়ে নেয় মোটা অংকের টাকা।
তবে ইতোমধ্যে দালালকে থানায় প্রবেশ না করতে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ তৌহিদুল আনোয়ার হুঁশিয়ারি করে দিয়েছেন।
ওসির দাবি, দালালদের দৌরাত্ম্যের লাগাম টেনে ধরা হচ্ছে। থানায় দালালদের জায়গায় হবে না। থানার পুলিশ অফিসারদের বলে দেয়া হয়েছে দালালদের সাথে কোন সখ্যতা না রাখতে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, দালাল না ধরলে পাওয়া যায় না কাঙ্ক্ষিত সেবা। এমনকি দালালের মাধ্যমে থানায় নিয়মিত সালিশ বসাচ্ছে পুলিশ। সেখানে অর্থ আত্মসাৎসহ জায়গা-জমি দখল ও দখলমুক্ত করতে সমাধান করা হচ্ছে চুক্তির বিনিময়ে।
দালালচক্রের দ্বিতীয় ফাঁদ হলো, তারা সকল মামলা বা অভিযোগের বাদী বিবাদীর মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে থাকে। পরবর্তীতে তারা সালিশের আকারে থানায় বা থানার আশপাশে বৈঠকের নামে উভয়পক্ষ থেকে হাতিয়ে নেয় মোটা অংকের টাকা। থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই), উপপরিদর্শক (এসআই) থেকে ইন্সপেক্টরদেরও নিজস্ব দালাল রয়েছে। দালালরা প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয় সমাধানে পার্টির সঙ্গে অর্থের চুক্তি করে পছন্দের পুলিশ কর্তাদের দিয়ে থানায় প্রায় নিয়মিত সালিশ বসাচ্ছেন। বাদী-বিবাদী উভয় পক্ষকে থানায় ডেকে ইচ্ছেমতো দেওয়া হয় রায়। এতে অনেক সময় বাদী-বিবাদী দুই পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হন এমন অভিযোগও রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভুক্তভোগী বলেন, সাধারণ মানুষ থানায় সেবা নিতে অনেক সময় নিরাশ হয়ে ফিরে যান। দালাল ধরলে মেলে কাঙ্ক্ষিত সেবা। দালাল না ধরলে পুলিশও সেবা দিতে আগ্রহ দেখান না। এ ছাড়া দালালরা নিজেরাই অভিযোগ হাতে নিয়ে তাদের পছন্দের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। নানা অযুহাত দেখিয়ে দালালরা অর্থ হাতিয়ে নেয় তারা চকরিয়া থানাকে দালালমুক্ত চান।##
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত