সোমবার, ডিসেম্বর ১, ২০২৫

ছেলের নির্যাতনে বাড়িছাড়া বৃদ্ধা মা

নোয়াখালী প্রতিনিধি:

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় ছেলের মামলা ও নির্যাতনে বাধ্য হয়ে বাড়ি ছেড়েছেন বৃদ্ধা আয়েশা আক্তার (৭৯)। গত পাঁচ দিন ধরে তিনি আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকাল ১০টায় চরবাটা ইউনিয়নের এক আত্মীয়ের বাড়িতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।

আয়েশা আক্তার চরজুবলী ইউনিয়নের চরজুবলী গ্রামের মৃত হাজী সিদ্দিক উল্যার স্ত্রী। তার দুই ছেলে ও পাঁচ মেয়ে রয়েছে। আয়েশার অভিযোগ, বড় ছেলে ফয়েজ উল্যাহ দীর্ঘদিন ধরে তাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করে আসছে। আয়েশা জানান, তার স্বামী সুবর্ণচরে ফয়েজকে মোটরসাইকেল শোরুম ও ডিলার ব্যবসা শুরু করতে সহায়তা করেন। ব্যবসায় লোকসান হওয়ার পর তার অনুরোধে স্বামী ফয়েজের জন্য সুবর্ণচর ইসলামী ব্যাংক থেকে ২৫ লাখ টাকা সিসি লোন নেন। কিন্তু ফয়েজ ওই লোন পরিশোধ না করে স্বাক্ষর জাল করে লোনের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে নেয়। এ ঘটনা জানার পর আয়েশার স্বামী দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ করেন। পরবর্তীতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ দোকানটি নিলামে তোলার নোটিশ দেয়।

সংবাদ সম্মেলনে আয়েশা আরও জানান, ব্যাংকের সুদসহ ৩৮ লাখ টাকা পরিশোধের জন্য জমি বিক্রি করতে হয়, কিন্তু দোকানের দখল এখনও ফয়েজের হাতে রয়ে গেছে। তিনি অভিযোগ করেন, ফয়েজ তার দুই বোনকে নিয়ে ওয়ারিশী সম্পত্তির ৪০ লাখ টাকা গোপনে বিক্রি করেন। আয়েশার মাসিক চিকিৎসার খরচও ফয়েজ বহন করতে অস্বীকার করেন এবং স্ত্রী পপির প্ররোচনায় তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন।

বৃদ্ধা মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “পূর্বের ঘটনার জন্য যদি ছেলের যথাযথ বিচার হতো, তবে সে আমাকে বাড়িছাড়া করার সাহস পেতো না।” তিনি সরকারের কাছে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেছেন।

পুলিশের বক্তব্য:
চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন মিয়া জানান, বৃদ্ধা আয়েশা আক্তার ও তার দুই ছেলে একই বাড়িতে বসবাস করতেন। ঘর নির্মাণ নিয়ে বিবাদে বড় ছেলে ফয়েজ উল্যাহ মারধরের শিকার হন। এ ঘটনায় ফয়েজের স্ত্রী তার মা সহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন, এবং আদালত আয়েশাসহ দুজনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে আয়েশা জামিনে মুক্তি পান।

 

সর্বাধিক পঠিত