শনিবার, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৫

জীবন যুদ্ধে পরাজয়, আত্মহত্যা করলো এক চবি শিক্ষার্থী

চবি প্রতিনিধি – মেহেদী হাসান ইমন

মানুষ হিসেবে ব্যর্থ’ বলে আত্মহত্যা করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ২১-২২ সেশনের (২য় বর্ষ, চবি-৫৭ ব্যাচ) শিক্ষার্থী তাজরিয়ান আহমেদ সোয়ারা।

শুক্রবার (১ নভেম্বর) ভোরে বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ ক্যাম্পাসের একটি ফ্ল্যাট বাসায় এ ঘটনা ঘটে।

মৃত্যুর কারণ জানতে চাইলে তার বান্ধবী ঈশা দে (সংগীত বিভাগ) চট্টগ্রাম ট্রিবিউন কে বলেন, “সোয়ারা কিছু দিন যাবৎ হতাশায় ছিল, ওর পারিবারিক কিছু সমস্যার কারণে। আমরা ধারণা করছি, পারিবারিক সমস্যার কারণে সোরায়া এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে”।

ঘটনার বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, রামিজা আমার বান্ধবী, রামিজার বান্ধবী সোয়ারা, আস্তে আস্তে সোয়ারাও আমার বান্ধবী হয়, পরীক্ষার জন্য তাদের বাসায় থাকি কিছুদিন। গতকাল স্টেশন থেকে আড্ডা দিয়ে বাসায় গেলাম। রামিজার আম্মু আসছে জেনে তড়িঘড়ি করে ঘর গোছাতে লাগলাম তিনজনে। আন্টি আসলো, কথাবার্তা হল, খাওয়া দাওয়া হল। রাত দুইটার দিকে সবাই যার যার রুমে ঘুমাইতে গেলাম। সকাল হল, আমি ডাইনিংয়ে ঘুমাচ্ছি। রামিজার আম্মু সোয়ারার দরজায় কড়া নাড়ছে। আমি বিরক্ত। রামিজাও চ্যাঁচামেচি শুরু করেছে। আমি কম্বল মুখে দিয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করছি। হুট করে তারা এমন চ্যাঁচামেচি শুরু করলো, আর ঘুমানো গেল না। আমি কিছু বুঝতে পারছি না। রামিজা আমাকে সোয়ারার রুমের জানালা দেখালো, আমি দেখলাম, সোয়ারা ফ্যানের সাথে আর গলার সাথে দড়ি পেঁচিয়ে ঝুলে আছে। রামিজার ছোটকালের বান্ধবী ঝুলে আছে। জানালা ডিঙিয়ে রুমে ঢুকতে চাইলাম আর আমাকে মানা করলো, নাহলে মানুষ নাকি সন্দেহ করতে পারে আমার কারণেই ও মারা গেছে। প্রক্টরকে কল দেওয়া হল, আমাদের কাছের বন্ধু-বান্ধবী, বড় ভাই-বোন, ছোট ভাই-বোনদের কল দেওয়া হল, আত্মীয়দের কল দেওয়া হল।
পুলিশ এলো, দরজা ভাঙলো, একটা ছোট্ট নোট:

“I’m sorry, I failed as a human”

বিশ্ববিদ্যালয় সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ কানন চট্টগ্রাম ট্রিবিউন কে বলেন, “খবর পেয়ে আমরা ফ্লাটে এসে দেখি মেয়েটি সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে রয়েছে। পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডির তদারকিতে তাকে থানায় পাঠানো হয়েছে। তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।”

আত্মহত্যা একটি গভীর ও জটিল সমস্যা, যা ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্য, সামাজিক সম্পর্ক এবং জীবনযাত্রার নানা কারণে ঘটে। আত্মহত্যা প্রতিরোধের জন্য সামাজিক সংযোগ এবং সহানুভূতি অপরিহার্য।

সর্বাধিক পঠিত