টেকনাফে আত্মস্বীকৃত মাদক কারবারি নিজের জন্মদিনে পোড়ালেন বাইক

বিশেষ প্রতিনিধি
কক্সবাজারের টেকনাফে জন্মদিন উপলক্ষ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের জন্য ভাইরাল কন্টেন্ট বানাতে গিয়ে নিজের মোটরসাইকেল পুড়িয়ে ফেলেছেন এক মাদক কারবারি।
৭ ডিসেম্বর (রবিবার) দিবাগত রাতে উপজেলার হ্নীলা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে,যদিও কেউ হতাহত হয়নি।
জন্মদিন উদযাপন করা ব্যক্তি হলেন স্থানীয় ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ জামাল হোছনের ছেলে মোহাম্মদ শাহ আজম প্রকাশ আজম সরকার।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, পুড়ে যাওয়া মোটরসাইকেলটিতে পেট্টোল ঢেলে দিচ্ছেন সেলিম নামে এক ব্যক্তি এবং পাশে আগুনের মশাল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন শাহ আজম।
পেট্রোল ঢালার কয়েক সেকেন্ড মূহুর্তের মধ্যেই আগুন লেগে গেলে মোটর সাইকেলটি জ্বলতে শুরু করে, তাৎক্ষণিক সরে যাওয়ায় দূর্ঘটনা থেকে বাঁচেন সেলিম ও শাহ আজম এবং পরে কিছু যুবক পানি ও বালি ব্যবহার করে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন।
এছাড়াও ঘটনাস্থলে আজমের ৩০তম জন্মদিন উপলক্ষে ব্যাডমিন্টন কোর্টে আগুনের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয় ‘ত্রিশ ইয়ারস’।
পরে এক ভিডিও বার্তায় শাহ আজম বলেন, ‘ভুলক্রমে এই আগুন লেগেছে এবং কেউ যাতে এই ধরনের ট্রেন্ডিং ভিডিও না বানায় সে জন্য সবাইকে সচেতনতা অবলম্বন করার অনুরোধ করছি।’
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একব্যক্তি জানিয়েছেন, বেলাল হোসেন নামের এক কন্টেন্ট ক্রিয়েটর পুরো আয়োজনটির ভিডিও ধারণ করছিলেন।
‘থটস অফ বিল্লাল’ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে বেলাল এই কাজ করেন বলে জানান ঘটনাস্থলে উপস্থিত আরেক ক্রিয়েটর লোকমান।
তিনি বলেন ‘ বিল্লালের অনুসারীরা এসব মিথ্যা ভিডিও বিশ্বাস করে নিজেরাই এমন কন্টেন্ট বানাতে গিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছেন। এমন এক ভিডিও বানাতে গিয়ে শাহআজম ভাই, বেলাল আর সেলিম প্রাণ হারাতে বসেছিল। আল্লাহর অশেষ রহমতে তারা বেঁচে গেছে।’
প্রসঙ্গত, গত ২৮ নভেম্বর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশের আলোচিত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর আল আমিন শীতকালীন কন্টেন্ট বানাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হন।
ময়মনসিংহ জেলার গৌরপুরের দাড়িয়াপুর ইটখোলা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
আল আমিন দূর্ঘটনায় আহত হয়ে রাজধানীর একটি হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছেন।
এদিকে জানা গেছে, সম্প্রতি পরবর্তী হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নিজেকে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন শাহ আজম।
নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতার লক্ষে তিনি এলাকায় প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং স্থানীয় মানুষকে নানাভাবে সহযোগিতা করার ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন।
শাহ আজম ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারিতে মাদক কারবারে জড়িত ব্যক্তি হিসেবে আত্মস্বীকৃতি দেওয়া ১০২ জন কারবারির মধ্যে একজন হিসেবে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে টেকনাফে আত্মসমর্পণ করেছিলেন।
নিজের পিতা জামাল মেম্বার সহ আত্মসমর্পণের পর দুইবছর কারাবাস শেষে মুক্তি পান শাহ আজম। কিছুদিন না যেতেই তিনি ২০২১ সালের ২৩ মে এক লাখ ইয়াবা সহ তিনি গ্রেফতার হয়েছিলেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্য বলছে, শাহ আজমের বিরুদ্ধে মাদক প্রতিরোধ আইন সহ বিভিন্ন অপরাধে অসংখ্য মামলা রয়েছে।