শনিবার, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৫

ধর্ষকদের বিরুদ্ধে দিনভর আন্দোলন-প্রতিবাদে সোচ্চার ইবি ক্যাম্পাস

ইবি প্রতিনিধি:

দেশব্যাপী নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, নিপীড়িত, ধর্ষণ, অনলাইনে হেনস্তা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক ও বিচারহীনতার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল।

সোমবার (১০ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে দুপুর ১২ টায় এ মানববন্ধন করেন তারা।

দুপুর ২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরুল কলা ভবনের সামনে ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতকরণে এবং নারীর প্রতি সংহিতা প্রতিরোধে মানববন্ধন করেছেন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীর হাতে “চুপ থাক, নয়তো ওরা জানে মেরে ফেলবে” লেখাযুক্ত অভিনব প্রতিবাদী প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।

এদিকে বিকেল ৪ টায় ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে দেশব্যাপী সকল ধর্ষণের বিচার এবং সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখা।

ইবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ বলেন, আমাদের বোনদের কেন ধর্ষণ করা হচ্ছে? যেদিকে তাকায় সেদিকে ধর্ষণ আর ধর্ষণ। মনে হচ্ছে দেশে কোনো সরকার নাই, পতিত সরকারের সব কর্মকর্তারা প্রশাসনের বিভিন্ন উচ্চপদস্থ পদে এখনো ঘাপটি মেরে আছে। তাদেরকে অতিদ্রুত চিহ্নিত করতে হবে। অন্তর্বতীকালীন সরকার সংস্কারের নামে সময় খেলাপ করা হচ্ছে, সারাদেশে লুটপাট চলছে। ইবিতেও শিক্ষক দ্বারা নারীরা হেনস্তা হয় কিন্তু তারা লোক লজ্জা ভয়ে বলতে পারে না। অনতিবিলম্ব আমরা ধর্ষক মুক্ত বাংলাদেশ চাই। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কোনো সাম্প্রদায়িক প্রতিষ্ঠান বা কোনো একক গোষ্ঠীর নই। এখানে সবাই যার যার নিজস্ব সংস্কৃতি চর্চা করবে। কেউ বাঁধা দিতে পারবে না।

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল কে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, উনি কি আইনের শাসন দেখেন না? উনি কি সারাদেশে অপকর্ম চোখে দেখেন না? সারাদেশে অপকর্মকাণ্ড অতিদ্রুত থামান, নাহলে পতিত সরকারের মতো পালিয়ে যেতে বাধ্য হবেন। এসময় তিনি ব্যর্থ সরকার হিসেবে আখ্যা দিয়ে পদত্যাগ দাবি জানান।

ইসলামী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার সভাপতি আল আমিন বলেন, এযাবৎ কোনো আইন সুষ্ঠু প্রয়োগ হয়নি। অপরাধ করলেও সে দলীয় পরিচয়ের কারণে পার পেয়ে যায়। ১৭৫৭ সালের পর থেকে এ দেশে শাসক ধর্ষণ কমেনি দলীয় পরিচয়ে সকলে পার পেয়েছে। আমাদের দেশে দেখা যায় অপরাধীরা শাস্তির পরিবর্তে আইনি সহায়তা পায়। ধর্ষকের পক্ষে যে আইনজীবী সহায়তা করবে আমরা তারও বিচার চাই।

ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. সাজ্জাদ হোসেন জাহিদ বলেন, প্রতিটি পরিবার থেকে মূল শিক্ষাটা শুরু হয়।একজন নারীর প্রতি একজন পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গির কেমন হবে। সেই প্রথম শিক্ষাটা পরিবার থেকে পাই। পরবর্তীতে সেটি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান বা সমাজ থেকে আসে। ধর্ষণ একটি এক্সিট্রিম ঘটনা। তার আগে নারী নিগ্রহের অনেক ছোট ছোট ঘটনা থাকে যা আমাদের সমাজে নানা ভাবে রয়েছে। আমরা চাই নারীর ছোট-বড় কোনো ধরনের নিগ্রহে শিকার না হোক। সেই বিচারটি হতে হবে অত্যন্ত দ্রুত। নারী-শিশু নির্যাতনের কোর্টেও দেখা যায় অনেক মামলা পরে আছে। আমরা চাই এর সংস্কার করে বিচারের রায় যেন অতি দ্রুত হয়। কারণ রায় না হলে নিপীড়করা ভয় পাবে না এবং এই সমস্যা দ্রুত নির্মূল করা সম্ভব হবে না।

সর্বাধিক পঠিত