প্রিন্ট এর তারিখঃ ডিসেম্বর ১, ২০২৫, ২:২১ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ অক্টোবর ২০, ২০২৫, ১২:৫৯ অপরাহ্ণ
প্রশাসনের নীরবতায় ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নাইক্ষ্যংছড়ি
কফিল উদ্দিন, নাক্ষ্যংছড়ি
পাহাড় ঝর্ণসহ নানান সৌন্দর্যেঘেরা পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ পার্বত্য বান্দরবান জেলা। উঁচু নিঁচু পাহাড় ঝিরি ঝরর্ণা নিয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যোঘেরা এই পার্বত্য অঞ্চল এখন প্রায় ধ্বংসের পথে।
পার্বত্য বান্দরবানে বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়নে গড়ে উঠেছে ভেঙের ছাতার মতো শতশত অবৈধ করাতকল ও ইটভাটা। যার মধ্যে রয়েছে নাক্ষ্যংছড়ি উপজেলাতে ৩০ টির অধিক অবৈধ করাতকল এবং ১২ টির মত অবৈধ ইটভাটা।
পলাতক হাসিনা সরকারের আমলে আওয়ামী নেতাকর্মীদের নেতৃত্বে এবং সহযোগিতায় পার্বত্য অঞ্চলে পাহাড়ের সৌন্দর্যকে ধ্বংস করতে গড়ে তুলেছিলেন এসব অবৈধ করাতকল এবং ইটভাটা। তখনকার সময়ে পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে একাধিক ইটভাটাই অভিযান পরিচালনা করেও বন্ধ করতে পারেনি এসব অবৈধ ইটভাটা ও করাত কল।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর ছাত্র জনতার হাত ধরেই ড. মোহাম্মদ ইউনুস'কে প্রধান উপদেষ্টা করে গঠিত'হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই পার্বত্য বান্দরবান জেলা তথা সারাদেশেই পরিবেশ ভারসাম্য রক্ষায় অবৈধ ইটভাটা ও করাতকলের বিরুদ্ধে কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা করে আসলেও প্রশাসনের যুগসাজোস ও নীরবতার কারণেই এসব অবৈধ ইটভাটা ও করাতকল গুলো সক্রিয় রয়ে যায়।
সম্প্রতি বান্দরবান জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে একটি গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয় বান্দরবান পার্বত্য জেলায় অবৈধ/অননুমোদিত সকল ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ রাখা নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় উক্ত আদেশের পর থেকেই সক্রিয় হয়ে উঠেছে ইটভাটা গুলো পূরুদমে প্রস্তুতির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে তারা। প্রশাসনের নাকের ডগায় পাহাড় কাটা ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন বন ধ্বংস করে গাছ কাটা ইত্যাদি কাজ চলমান থাকলেও নিরব দর্শকের ভূমিকায় প্রশাসন। প্রশাসনের এমন নীরবতা দেখে প্রশ্ন জেগেছে জনমনে।
পরিবেশবিদরা বলছেন এভাবেই চলতে থাকলে পার্বত্য বান্দরবান জেলাতে পাহাড়ি সৌন্দর্য একদিন মরুভূমিতে পরিণত হবে তাই প্রশাসনের এমন নীরবতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে এবং অবৈধ স্থাপনা গুলোতে অভিযান পরিচালনার পরিবর্তে উচ্ছেদ অভিযান করে চির তরেই বন্ধ করতে হবে এসব স্থাপনা, তাতেই পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা পাবেন সাথে জীববৈচিত্র্য।
পরিবেশবিদরা আরো বলেন দীর্ঘ বছর ধরে পার্বত্য অঞ্চলে এসব অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম দেখে আসছি এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি, তবুও সরকারের পক্ষ থেকে পাহাড়ের বন ধ্বংসকারী এসব অবৈধ ইটভাটা করাতকল গুলো বন্ধ করার কোন কার্যকরী পদক্ষেপ দেখা যায়নি। তাই এখনও যদি এসব অবৈধ ইটভাটা ও করাতকল বন্ধের প্রস্তুতি না নেয় সরকার তাহলে পাহাড়ে বড় ধরনের বিপর্যয় বই আসতে পারে, ধ্বংস হতে পারে বন, পরিণত হবে মরুভূমিতে।
নিষেধাজ্ঞা থাকার পরেও কিভাবে ইটভাটার কার্যক্রমের প্রস্তুতির নিচ্ছে বিষয়'টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ মাজহারুল ইসলাম চৌধুরীর কাছে জানতে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি মোবাইল রিসিভ করেননি।
ইটভাটা প্রস্তুতির বিষয়টি বান্দরবান জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরে সহকারী পরিচালক রেজাউল করিম কাছ থেকে জানতে চাইলে তিনি জানান সত্যতা পেলে দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত