এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম পঞ্চগড়-১ আসন থেকে আর দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ কুমিল্লা-৪ আসন থেকে নির্বাচন করতে চান। দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ নোয়াখালী-৬ আসন থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এসব আসনের মধ্যে শুধু ঢাকা-৯ ও ঢাকা-১৮ আসন ছাড়া সব কটিতেই প্রার্থী দিয়েছে বিএনপি। তবে এই দুই আসন তারা এনসিপির প্রার্থীদের জন্য ফাঁকা রেখেছে কি না, তা জানা যায়নি।
এর বাইরে এনসিপির আরও অর্ধশতাধিক কেন্দ্রীয় নেতা নির্বাচন করতে চান। তাঁদের মধ্যে মনিরা শারমিন নওগাঁ-৫, সারোয়ার তুষার নরসিংদী-২, আতিক মুজাহিদ কুড়িগ্রাম-২, আবদুল্লাহ আল আমিন নারায়ণগঞ্জ- ৪, এস এম সাইফ মোস্তাফিজ সিরাজগঞ্জ-৬, আশরাফ উদ্দীন মাহাদী ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ এবং জয়নাল আবেদীন শিশির কুমিল্লা-১০ আসন থেকে নির্বাচন করতে আগ্রহী।
ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারে আছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। তাঁরা সরাসরি এনসিপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত না হলেও দলটির বিভিন্ন সিদ্ধান্তে প্রভাব রাখেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
এনসিপি সূত্র বলছে, বিএনপির সঙ্গে আসন সমঝোতা হলে সরকার থেকে পদত্যাগ করে ঢাকা-১০ আসন থেকে নির্বাচন করতে আগ্রহী আসিফ মাহমুদ। সেটা এনসিপির মনোনয়নে হতে পারে, স্বতন্ত্রভাবেও হতে পারে। আর বিএনপির সঙ্গে বোঝাপড়া হলে মাহফুজ আলম লক্ষ্মীপুর-১ আসন থেকে নির্বাচন করতে আগ্রহী। বিএনপি ঢাকা-১০ ও লক্ষ্মীপুর-১ আসন ফাঁকা রেখেছে। তবে সেটি এই দুই উপদেষ্টার জন্যই কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে লক্ষ্মীপুর-১ আসনে বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম জোটের প্রার্থী হিসেবে বিএনপি থেকে অনেকটাই সবুজ সংকেত পেয়েছেন বলে জানা গেছে।
এই মুহূর্তে এনসিপি নির্বাচনী জোট নিয়ে চিন্তা করছে না। অনানুষ্ঠানিকভাবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। নির্বাচনী আবহটাকে আমরা সাংগঠনিক গতিশীলতা বাড়ানোর জন্য কাজে লাগাচ্ছি
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন
নির্বাচনী সমঝোতা বা জোট নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি এনসিপি এখন একটি প্রার্থী তালিকাও তৈরি করছে। আগামী সপ্তাহে একটি আংশিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হতে পারে বলে এনসিপি সূত্রে জানা গেছে।
এনসিপির মূল্যায়ন হচ্ছে, চার-পাঁচটি নির্বাচনী আসনে দলের অবস্থান ভালো। এর মধ্যে দু-একটি জায়গায় জামায়াত এনসিপির প্রার্থীদের সমর্থন দিতে পারে। যেমন নোয়াখালী-৬ ও কুড়িগ্রাম-২ আসন।
একজন নেতার ভাষ্য, নির্বাচন সামনে রেখে অন্য দলের অনেকেই এনসিপির সঙ্গে আসতে চাইছেন। তাঁদের মধ্যে বিভিন্ন এলাকায় বিএনপিরও অনেকেই আছেন। এসব লোককে নিয়ে যদি সম্মানজনক সংখ্যক আসনে প্রার্থী দেওয়া যায়, তাহলে এনসিপি এককভাবে নির্বাচনে যেতে পারে। তবে এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে শেষ সময়ে।
এনসিপি এখন এককভাবে নির্বাচন করার সক্ষমতা অর্জন করতে চাইছে বলে জানান দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই মুহূর্তে এনসিপি নির্বাচনী জোট নিয়ে চিন্তা করছে না। অনানুষ্ঠানিকভাবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। নির্বাচনী আবহটাকে আমরা সাংগঠনিক গতিশীলতা বাড়ানোর জন্য কাজে লাগাচ্ছি।’ তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা এককভাবেই নির্বাচন করতে চাই। কোনো জোট বা সমঝোতা হয় কি না, তা দেখার জন্য নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা বা এর শেষ সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।’