চিটাগং ট্রিবিউন ডেস্ক
বিগত আওয়ামী লিগ সরকারের সময়ে অন্যায় সুবিধা নিয়ে তৃতীয় বিভাগ বাছাই ক্রিকেট থেকে উঠে আসা বিতর্কিত ১৫টি ক্লাবের কাউন্সিলরদের রেখেই চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে বিসিবির নির্বাচন কমিশন। আজ বিকেলে বিসিবির ওয়েবসাইটে এবং সংবাদ বিজ্ঞপ্তি আকারে দেওয়া চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় নেই শুধু নরসিংদী জেলা ক্রীড়া সংস্থার কোনো কাউন্সিলর।
নাজমুল হাসান বিসিবি সভাপতি থাকার সময় বিতর্কিত ১৮টি ক্লাব তৃতীয় বিভাগ বাছাইয়ের বৈতরণী পার হয়েছিল লিগ না খেলেই। তিনটি ক্লাব পরে আবার তৃতীয় বিভাগ বাছাইয়ে নেমে যাওয়ায় এদের মধ্যে কাউন্সিলর হওয়ার মতো ক্লাব ছিল ১৫টি।
এন্ট্রি ফি একলাফে ১ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা করে দেওয়ায় প্রায় কোনো ক্লাবই আর তৃতীয় বিভাগ বাছাইয়ে ছিল না। প্রতিবছর বোর্ডের ঘনিষ্ঠদের দুটি করে ক্লাব নাম এন্ট্রি করত এবং তারাই চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ হয়ে তৃতীয় বিভাগে উঠত। এসব ক্লাবকে টেনে তুলে বিসিবিতে নিজেদের ভোটব্যাংক বাড়াতেই মূলত এমন অপকৌশলের আশ্রয় নিয়েছিল সেই সময়ের বোর্ড।
আওয়ামী লিগ সরকারের পতনের পর স্বাভাবিকভাবেই ক্লাবগুলোর মালিকানাও বদলে গেছে। মজার বিষয় হলো, একসময় যাঁরা অবৈধ পন্থায় ক্লাবগুলোকে তৃতীয় বিভাগ লিগে সুযোগ করে দেওয়ার প্রতিবাদে সোচ্চার ছিলেন, সুযোগ বুঝে এখন তাঁরাই ক্লাবগুলোর মালিকানায়।
এসব ক্লাবের তৃতীয় বিভাগ বাছাই পার হওয়ার প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ছিল না বলে দুদকের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়। দুদক বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্য অনুসন্ধানেরও সুপারিশ করে। এ কারণে বিসিবির নির্বাচন কমিশন ২৩ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকায় বিতর্কিত ১৫টি ক্লাবকে রাখেনি। তবে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ ছিল ক্লাবগুলোর।
গত দুই দিন সেসব আপিল গ্রহণ ও নিষ্পত্তি করে আজ প্রকাশিত চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় বিতর্কিত ১৫টি ক্লাবকেই রেখেছে নির্বাচন কমিশন। অবশ্য ক্লাবগুলোর পক্ষ থেকে যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে, অভিযুক্ত হলেই কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। অভিযোগ প্রমাণিত হতে হয়। বিতর্কিত ক্লাবগুলোর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ যেহেতু এখনো প্রমাণিত হয়নি, তাদের যেন নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হয়। সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচন কমিশনও সেটি বিবেচনা করেই তাদের চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় রেখেছে।
খসড়া ভোটার তালিকায় নরসিংদী, সিলেট, নওগাঁ, বগুড়া ও পাবনা জেলা ক্রীড়া সংস্থা থেকেও কোনো কাউন্সিলর ছিলেন না। চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় নরসিংদী ছাড়া বাকি শূন্যস্থানগুলোও ভরে গেছে।
তামিম ইকবালের বিরুদ্ধে আসা আপিল আমলে না নেওয়ার কথা গতকালই জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কমিশন আমলে নেয়নি সাবেক বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে করা আপিলও। ওল্ড ডিওএইচএসের কাউন্সিলর তামিমের সঙ্গে রেঞ্জার্স ক্রিকেট একাডেমির ফারুকের নামও আছে চূড়ান্ত ভোটার তালিকায়।
তামিমের কাউন্সিলরশিপ নিয়ে অভিযোগ ছিল, তিনি নাকি এখনো ‘সাবেক ক্রিকেটার’ হননি, ওল্ড ডিওএইচএস ক্লাবেরও তিনি কেউ নন। আর ফারুকের বিরুদ্ধে আপিলের কারণ, তিনি কাউন্সিলর ফর্ম জমা দিয়েছিলেন নির্ধারিত সময়ের পর। গতকাল নির্বাচন কমিশনকে লিখিতভাবে ফারুক এর কারণ ব্যাখ্যা করলে কমিশন সেটি গ্রহণ করে।
বিসিবির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৬ অক্টোবর। আগামীকাল মনোনয়নপত্র বিতরণ ও পরশু মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন।