শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৫

বিপিডিবি ইঞ্জিনিয়ার নাজমুলের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

মোঃ ইব্রাহিম খলিল, কক্সবাজার প্রতিনিধি

মহেশখালী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভূমি অধিগ্রহণ নিয়ে নানা অনিয়ম ও হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। কক্সবাজারের মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্রকল্পের সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার নাজমুল হোসেন এবং অফিস সহকারী ফরহাদুল আলমের বিরুদ্ধে একাধিক ভুক্তভোগী সরাসরি অভিযোগ তুলেছেন।

অভিযোগের বিবরণ:
বিগত ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন মহেশখালীর ৭ জন ভূমি মালিক। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অভিযোগকারী হলেন আজিজুল হক আজিজ ও সুজা উদ্দিন জিসান। অভিযোগে বলা হয়েছে, মাতারবাড়ি মৌজার বিভিন্ন খতিয়ানের জমি অধিগ্রহণের টাকা উত্তোলনের নামে প্রকল্পের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নগদ অর্থ গ্রহণ এবং হয়রানির অভিযোগ ওঠে।

ভুক্তভোগীরা দাবি করেছেন, অধিগ্রহণের চেক পাশ হওয়ার আগে নগদ অর্থ আদায় এবং পরবর্তীতে আরও অর্থের দাবি জানান অভিযুক্ত কর্মকর্তারা। এমনকি চাপ প্রয়োগ করলে চেক প্রদানেও বিলম্ব ঘটানো হয়।

প্রকল্প ও দুর্নীতির চিত্র:
মহেশখালীর মাতারবাড়ি ও ধলঘাটা মৌজায় ১,২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য ১,৪১৪ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এতে বরাদ্দ ছিল ২৩৭ কোটি টাকা। তবে অভিযোগ রয়েছে, ভূমি অধিগ্রহণের টাকা প্রদানে দীর্ঘসূত্রতা, দুর্নীতি ও দালালচক্রের দৌরাত্ম্য থামানো যাচ্ছে না।

অভিযোগকারীদের ভাষ্যমতে, আগেই শতকরা হারে অর্থ দাবি করা হয়। তাদের দাবি অনুযায়ী না দিলে চেক আটকে রাখা হয়। ভুক্তভোগীরা অনেকে হুমকির সম্মুখীন হয়ে পিডিবির কাছে সরাসরি আবেদন করেছেন।

অভিযুক্তদের প্রতিক্রিয়া:
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রকল্পের সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার নাজমুল হোসেন সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আগে একই প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে ২৩ কোটি টাকা লোপাটের ঘটনায় জেল পর্যন্ত যেতে হয়েছে কয়েকজন কর্মকর্তাকে।

ভুক্তভোগীদের আবেদন:
ভূমি মালিকরা চান তাদের অধিকার অনুযায়ী প্রাপ্ত অর্থ দ্রুত বুঝিয়ে দেওয়া হোক এবং সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হোক। তারা আরো উল্লেখ করেছেন, ঢাকায় গিয়ে চেক উত্তোলনের জন্য আবেদন করেছেন, যাতে স্থানীয় পর্যায়ে হয়রানি এড়ানো যায়।

বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে এ ধরনের অভিযোগ প্রকল্পের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

 

সর্বাধিক পঠিত