শনিবার, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৫

ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য সংকট: দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নতুন উত্তেজনা

চিটাগং ট্রিবিউন ডেস্ক

ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য সম্পর্কে নতুন করে সৃষ্ট এক সংকট দুই প্রতিবেশী দেশের কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।

শনিবার ১৭ মে, ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় এবং ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড (DGFT) এক নির্দেশনার মাধ্যমে বাংলাদেশের পণ্য আমদানিতে সীমাবদ্ধতা আরোপ করে। এই বিধিনিষেধের ফলে প্রায় ৭৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য, যা মোট দ্বিপাক্ষিক আমদানির ৪২% প্রতিনিধিত্ব করে, প্রভাবিত হয়েছে।

নতুন বিধিনিষেধ অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে আগত তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক সামগ্রীসহ বেশ কয়েকটি পণ্য শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কয়েকটি সমুদ্রবন্দর দিয়ে আমদানির অনুমতি পাবে। স্থলবন্দর দিয়ে এসব পণ্য প্রবেশ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এতে বাংলাদেশের রপ্তানি খাত একটি বড় ধাক্কার সম্মুখীন হতে পারে, বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্প, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস।
ভারতের এই পদক্ষেপের পেছনে একাধিক কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। প্রথমত, বাংলাদেশ সরকার ভারতীয় কিছু পণ্যের ওপর যে ধরনের শুল্ক বা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, তার জবাবে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয়ত, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের চীনের প্রতি ঘনিষ্ঠ মনোভাব এবং অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব ভারতের উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। এছাড়াও, ভারতের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলিকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য সরকার এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলে দাবি করা হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে শুধু বাংলাদেশই নয়, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলিও প্রভাবিত হতে পারে, যেখানকার অনেক বাজার বাংলাদেশি পণ্যের উপর নির্ভরশীল। এ পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ বাণিজ্য সম্পর্কের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
তবে কূটনৈতিক মহল মনে করছে, এই সংকট সমাধানের জন্য দুই দেশের উচ্চপর্যায়ে আলোচনার দরকার রয়েছে। কারণ, ভারত ও বাংলাদেশ উভয় দেশের অর্থনীতি এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এই সম্পর্কের উপর অনেকটাই নির্ভরশীল।

সর্বাধিক পঠিত