শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৫

মগনামা ইউপিতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হতে মরিয়া কৃষকলীগ নেতা!

পেকুয়া, প্রতিনিধি
৫ আগস্টের আগে ছিলেন চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিতর্কিত আওয়ামীলীগ নেতা জাফর আলম এবং জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠজন। সেই সুযোগে গত হাসিনা সরকার আমলের ইউপি নির্বাচনে প্রভাব কাটিয়ে হয়ে যান ইউপি সদস্য।
এমনকি, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া এবং হামলা চালানোর ঘটনায় জড়িত থাকলেও টাকার কৌশলে মামলা থেকে বেঁচে যান। এরপর সুবিধাবাদী কয়েকজন নেতার আশ্রয় নিয়ে বেপরোয়া হয়ে শুরু করেন নানা অপকর্ম।
চেয়ারম্যান বহিষ্কার থাকার সুযোগে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পদ ভাগিয়ে নিতে আওয়ামীপন্থি ইউপি সদস্যদের ঐক্যবদ্ধ করে শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল উপজেলা প্রশাসনের সহকারি কমিশনার ভূমি নুর পেয়েরা বেগমকে ইউপি কার্যালয়ে বিচারকার্য চলাকালে তার নেতৃত্বে প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত করেন। এনিয়ে এলাকায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
এমন অভিযোগ পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার ও ইউনিয়ন কৃষকলীগের সাবেক সভাপতি বদিউল আলমের বিরুদ্ধে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের বাসিন্দা বদিউল আলম গত হাসিনা সরকার আমলে আওয়ামী রাজনৈতিক নেতাদের সাথে ঘনিষ্ঠতার সুযোগে মনোনীত হন ইউনিয়ন কৃষকলীগের সভাপতি। বিরোধী পক্ষকে দমন পীড়নে ভূমিকা রাখায় আওয়ামী সিনিয়র নেতাদের নজরে পড়লে তাদের নাম ভাঙিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা কামিয়ে নেন। এরপর বিগত ইউপি নির্বাচনে মগনামা ইউপির ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার নির্বাচিত হন। নির্বাচিত হওয়ায় পর এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে গিয়ে খবরের শিরোনাম হন। গত ৫আগস্ট এর আগে ছাত্র-জনতাকে রুখে দিতে বলপ্রয়োগ করেন। পটপরিবর্তনের পর কিছুদিন আত্মগোপনে চলে গেলে কৌশল অবলম্বন করে এলাকায় চলে আসেন। মামলায় জড়িত হয়ে চেয়ারম্যান ইউনুছ চৌধুরী বহিষ্কার হলে আওয়ামীপন্থি ইউপি সদস্যদের ঐক্যবদ্ধ করে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পদটি ভাগিয়ে নিতে নানা কৌশল অবলম্বন করেন। এক শ্রেণির সুবিধাবাদী নেতাদের সাথে আতাঁত করে বদিউল আলম এলাকায় বীরদর্পে চলতে পারায় বেপরোয়া হয়ে উঠেন।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে কৃষকলীগ নেতা বদিউল আলম বলেন, আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও কখনো দলের প্রভাব দেখিয়ে কারো ক্ষতি করি নাই। আর মামলা জটিলতায় চেয়ারম্যান ইউনুছ চৌধুরী দায়িত্বে বাইরে থাকায় প্যানেল হিসেবে আমি কিছুদিন দায়িত্ব পালন করেছি। প্যানেল হিসেবে যেই কেউ একজনকে সরকার পক্ষ থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দিতে পারে, অথবা প্যানেল থেকে দায়িত্ব পালন করতে পারে। তা ইউনিয়ন পরিষদ বিচারকার্য চালাতে খুবই প্রয়োজন। আমি যেই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হতে চাচ্ছি তা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার।
এদিকে মগনামার স্থানীয় বেশ কয়েকজন বাসিন্দা জানান, মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম স্থবীর হয়ে পড়েছে। স্বাভাবিক কার্যক্রম চালাতে অবশ্যই মনোনীত ব্যক্তি দরকার। যেহেতু বদিউল আলম আওয়ামীপন্থি ইউপি সদস্য তাকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করলে বিশৃঙ্খলা দেখা দিবে। এছাড়াও বিগত সময়ে বেশ কিছু বিতর্কিত কর্মকান্ডের কারণে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। মগনামার শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করার চেষ্টায় রয়েছে ইউপি সদস্য বদিউল আলম সহ আওয়ামীপন্থি আরো বেশ কয়েকজন ইউপি সদস্য। তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ারও দাবী জানান তারা।

সর্বাধিক পঠিত