শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৫

মহেশখালীর মাটি দেশি-বিদেশি কোম্পানির কাছে বিক্রির জন্য নয়” – জলবায়ুযোদ্ধা সাবরিনা রহিম প্রিয়া

চিটাগং ট্রিবিউন ডেস্ক
মহেশখালী, চকরিয়া এবং টেকনাফের বিস্তীর্ণ এলাকায় ভূমি অধিগ্রহণ ও বিদেশি বিনিয়োগ নীতির বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবেশকর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, এই প্রকল্পগুলো বিদেশি বিনিয়োগকারী, বিশেষ করে ভারত ও জাপানের স্বার্থ রক্ষা করছে, যা সাধারণ কৃষক, জেলে ও শ্রমজীবী মানুষের জীবন ও জীবিকাকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এই প্রতিবাদে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন জলবায়ুযোদ্ধা সাবরিনা রহিম প্রিয়া, যিনি সম্প্রতি একটি মানববন্ধনে অংশ নিয়ে সরকারের ভূমি অধিগ্রহণ নীতির তীব্র সমালোচনা করেন।
মাতারবাড়ী প্রকল্পের প্রধান ফটকের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে যোগ দিয়ে সাবরিনা রহিম প্রিয়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি দীর্ঘ পোস্টে তার ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি সেখানে বলেন, “আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, মহেশখালী, চকরিয়া, টেকনাফের মাটি, দেশি বিদেশি কোম্পানির কাছে বিক্রির জন্যে নয়। আমার গৃহস্থের ভিটা, গ্রাম, চাষের জমি, লবনের মাঠ, মাছের ঘোনা, মসজিদ, মন্দির, কবরস্থান, শ্মশান আমার দেশের মানুষের।” তাঁর এই বক্তব্য দ্রুত স্থানীয়দের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্যাপক সমর্থন লাভ করে।
তিনি অভিযোগ করেন যে, কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র, গভীর সমুদ্র বন্দর, অর্থনৈতিক জোন এবং পর্যটন অঞ্চলের মতো বিভিন্ন প্রকল্পের নামে স্থানীয় মানুষকে তাদের পৈতৃক ভিটা থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। সাবরিনা প্রিয়া আরও বলেন যে, এই উচ্ছেদের কাজটি বিডা (BIDA) এবং বেজা (BEZA) এর মতো সরকারি সংস্থাগুলোর মাধ্যমে করা হচ্ছে। তিনি দাবি করেন যে, এই প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত করতে সরকার সম্প্রতি মিডা (MIDA) অধ্যাদেশ-২০২৫ ঘোষণা করেছে, যা স্থানীয়দের উচ্ছেদ প্রক্রিয়াকে আরও ত্বরান্বিত করবে।
তিনি ভূমি অধিগ্রহণ আইনকে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলের আইনের ধারাবাহিকতা বলে উল্লেখ করেন এবং বলেন, কক্সবাজারের মানুষ এই ধরনের আইন মানে না। তাঁর ভাষ্যমতে, ভারতের আদানি গ্রুপকে ৫০০ একর এবং জাপানের জাইকাকে (JICA) ৩,৪০০ একর জমি দেওয়া হয়েছে, যার মাধ্যমে দেশের ভেতরে ‘মিনি ভারত’ আর ‘মিনি জাপান’ তৈরি হচ্ছে।
সাবরিনা রহিম প্রিয়া অবিলম্বে মহেশখালীর সাধারণ মানুষের ভূমির অধিকার কেড়ে নেওয়া বন্ধ করার এবং মিডা অধ্যাদেশ-২০২৫ দ্রুত বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। এই আন্দোলনকে স্থানীয় মানুষের ভূমি ও অধিকার রক্ষার জন্য একটি বৃহত্তর প্রতিবাদের অংশ বলে মনে করা হচ্ছে।

সর্বাধিক পঠিত