
সাপ্তাহের বাজার-সদাই
মোহাম্মদ জামশেদুল ইসলাম (চট্টগ্রাম)
<span;>সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে। কাঁচামরিচ ও শাকসবজি আগের মতো। কমেছে ডিমের দাম। আর ক্রেতা কম মাছবাজারে। কিনছেন অল্পস্বল্প। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে নগরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমনটি দেখা গেছে।একমাত্র ছেলের জন্য সপ্তাহে একদিন ব্রয়লার মুরগি কিনেন বেসরকারি চাকরিজীবী আল আমিন। সেই মুরগির দামও বেড়ে গেছে। তার আক্ষেপ, ‘পুরো সপ্তাহ যা খাওয়া হয় না, তা খাই শুক্রবার। ছেলের জন্য সপ্তাহে মাত্র একটা মুরগি কিনি। সেটির দামও বাড়তে শুরু করলো।বাজারে ফার্মের মুরগির বাদামি ডিমের দাম প্রতিডজনে ৫ টাকা কমেছে। বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। পাইকারি দোকানে ১৩০ থেকে ১৩৫। আগের সপ্তাহের তুলনায় বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে ছিল ১৬৫-১৭০; যা গতকাল ১৮৫-১৯৫ টাকা দরে বিক্রি হয়। আর সোনালি মুরগির দাম ৩১০-৩৩০ টাকা। এছাড়া দেশি মুরগি ৫৬০ থেকে ৫৮০। হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৬৫০ টাকা কেজি।বিক্রেতারা জানিয়েছেন, কয়েকদিনের মধ্যে মুরগির দাম আরও বাড়তে পারে।মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায় ক্রেতা কম। কাজীর দেউড়ি বাজারে মাছ বিক্রেতা মো. কাসেম বলেন, ‘মাছ নিয়ে বসে আছি। ক্রেতা কম। বেচাকেনা কম। একদম ঠান্ডা যাচ্ছে বেশ কিছুদিন। মানুষ কিনলেও অল্প অল্প কিনে। আগের মতো বেচাবিক্রি নাই।’
<span;>মো. জাহাঙ্গীর নামে আরেক মাছবিক্রেতা জানান, শীত আসতেই মাছের বিক্রি কমে গেছে। দেশি তাজা মাছ কিছু বিক্রি হচ্ছে। তাও অল্প করে নিচ্ছে মানুষ।
<span;>মাছ বিক্রেতা মোহাম্মদ হোসাইনও বলেন, ‘খুবই কম বিক্রি হচ্ছে।তবে সামুদ্রিক মাছ বিক্রেতা অন্তর বলেন, ‘বড় মাছ বিক্রি হচ্ছে। সন্ধ্যায়ও একটা বড় কোরাল বিক্রি করলাম। লাক্ষ্যা বিক্রি হচ্ছে। নদীর পাঙ্গাস বিক্রি করছি। এসব মাছ তো সবাই কিনে না। এগুলোর আলাদা কাস্টমার আছে।’১৮০০ টাকা দিয়ে এককেজি মাছ কেনার মতো কয়জন আছে? নদীর এই পাঙ্গাশটা ১৬ কেজি ওজনের। কেটে বিক্রি করলে ১২০০ টাকা কেজি আর কেউ পুরোটা নিলে ৯০০ টাকা কেজি রাখবো। এই মাছ নেওয়ার কাস্টমার কম বাজারে।’-যোগ করেন অন্তর।মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, রুই ৩৫০ থেকে ৪৫০, কাতল ৩২০ থেকে ৪৮০, চাষের শিং ৫৫০ থেকে ৬০০, চাষের কৈ ২২০ থেকে ২৫০, কোরাল ৭৫০ থেকে ১২০০, চাষের পাঙাশ ১৫০ থেকে ২২০ ও তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পোয়া ৩৫০ থেকে ৫০০, পাবদা ৩৫০ থেকে ৪৫০, শোল ৭০০ থেকে ১০০০ এবং চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৯৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।অন্যদিকে অপরিবর্তিত রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। গরু ৭৫০-৯০০ এবং খাসি ১০৫০-১১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।গত সপ্তাহের হিসাবে সবজির বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। আমদানি হলেও বাজার ভেদে নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৭০-৯০ টাকা কেজি। আগের মতো ৫০ টাকার মধ্যেই আছে অধিকাংশ সবজির দাম। কাঁচা মরিচ কেজি ৫০ থেকে ৬০ । লাউ প্রতিটি ৪০ থেকে ৫০। মূলা কেজি ৪০। ফুলকপি, বাঁধাকপি, মিষ্টিকুমড়া ৪০ থেকে ৫০। পেঁপে ৫০। শালগম ৪০-৫০ টাকা কেজি।খুচরা বাজারে পেঁয়াজ ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগের মতো রসুনের দাম ২১০ থেকে ২২০। মান ভেদে ভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে আদা।সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর পর পুরনো তেলের বোতল গায়ের মূল্যের চেয়ে বাড়তি দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে।বর্তমানে প্রতিকেজি মশুর ডাল (মোটা) ১০০-১১০ এবং মশুর (দেশি) ১৩৫-১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর মশুর ডাল (ক্যাঙ্গারু) বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। মুগ ডাল (দেশি) ১৪০-১৬৫ এবং ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১২০-১২৫ টাকায়।খোলা চিনি ১২০ থেকে ১২৭ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি প্যাকেট চিনি ১২৫। লাল চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪০।চালের দাম খোলা বাজারে, কাটারি ৭৬, জিরাশাইল ৭৩, নাজিরশাইল ৮০, মিনিকেট আতপ ৬৮, মিনিকেট সেদ্ধ ৬১, স্বর্ণা ৫৬ ও গুটি স্বর্ণা ৪৯। ৫০ কেজির বস্তা কিনলে কাটারি ৩৮০০, জিরাশাইল ৩৬৫০, নাজিরশাইল ৪০০০, মিনিকেট আতপ ৩৪০০, মিনিকেট সেদ্ধ ৩০৫০, স্বর্ণা ২৮০০ ও গুটি স্বর্ণা ২৪৫০ টাকা।
