
হামলাকারীরা নুরুল আমিন গ্রুপের সমর্থক’
মিরসরাইয়ে চাঁদা না পেয়ে দুদফা হামলা
চট্টগ্রাম অফিসঃ
চট্টগ্রামের মিরসরাই পৌরসভায় এক প্রবাসীর নির্মাণাধীন বাড়িতে চাঁদা না পেয়ে হামলা ও লুটপাট চালানোর অভিযোগ ওঠেছে। এ সময় তার শ্বশুর-শাশুড়ি এবং শ্যালককে মারধর করা হয়। মূলত স্থানীয় বিএনপি নেতাদের একটি চক্র চাঁদা চেয়ে এই হামলা করেছে—অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। এ ঘটনায় ৫ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে একটি মামলা করেছেন ওই প্রবাসীর শ্বশুর।
মামলার আসামিরা হলেন—মিরসরাই পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের জামশেদ আলম, তার ছেলে ফরহাদ হোসেন তুহিন, ফরিদ এবং একই এলাকার মৃত শামছুল আলমের ছেলে মো. হারুন। হামলায় আহতরা হলেন—প্রবাসী সোলেমানের শাশুড়ি বিবি ফাতেমা (৫৫), শ্বশুর সিরাজুল হক (৫৮) এবং তার শ্যালক আলী আকবর (৩৫)।জানা গেছে, অভিযুক্ত তুহিন মিরসরাই পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক। তার ছোট ভাই মো. ফরিদ দুটি হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলার আসামি।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ২ ডিসেম্বর সকালে মিরসরাই পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সংলগ্ন নির্মাণাধীন সোলেমান ম্যানশনে যায় চারজন। তারা দুদফায় ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ভবনের পার্কিং গ্যারেজের দেয়ালের গাঁথুনি ভেঙে ফেলেন তুহিন, ফরিদ, জামশেদ ও হারুন। এ সময় শ্রমিকদের সাথে তাদের হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুহিনের ভাই ফরিদ ধারালো ছুরি দিয়ে প্রবাসীর শ্বশুর-শাশুড়ি এবং শ্যালকের ওপর হামলা চালান। পরবর্তীতে হামলায় আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখানেও দ্বিতীয় দফায় ২০ থেকে ২৫ জন তাদের ওপর হামলা চালান এবং অপহরণের চেষ্টা করেন।এদিকে, হামলার শিকার প্রবাসী পরিবারের বিরুদ্ধে উল্টো মামলা করেছেন অভিযুক্তরা। সেই মামলায় গ্রেপ্তার আতঙ্কে ভুক্তভোগী সবাই এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
প্রবাসী সোলেমান বলেছেন, ‘ফরিদ একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী তার বিরুদ্ধে দুটি হত্যা মামলা ও একাধিক ডাকাতি, চুরি, ছিনতাইসহ বহু মারামারির মামলা রয়েছে বিভিন্ন থানায়। তার ছোটভাই তুহিনসহ দুই ভাই মিলে ৫ আগস্টের পর মিরসরাই পৌর এলাকায় চাঁদাবাজি, লুটপাট, চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ড করছে। তারা জনজীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে। সন্ত্রাসীদের চাঁদা না দিলে সাধারণ মানুষের ওপর হামলা করে তারাই আবার পুলিশের কাছে উল্টো মামলা করে। আমার কাছে চাঁদা দাবি করে না পেয়ে হামলা করে থানায় গিয়ে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে তারা। আমি এর প্রতিকার চাই।’
মামলার বাদী সোলেমানের শ্বশুর সিরাজুল হক সংবাদ কর্মীদের বলেন, ‘হামলাকারীরা সবাই সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমিন গ্রুপের সমর্থক। তাদেরকে চাঁদা না দেওয়ায় তারা আমাদের মেরে উল্টো আমাদের নামেই থানায় মামলা করে ওয়ারেন্ট ইস্যু করেছে। এখন আতঙ্কে আমরা বাড়িছাড়া হয়ে ঘুরছি। তারা প্রভাবশালী হওয়ায় ন্যায়বিচার পাব কিনা শঙ্কায় আছি।’
তবে চাঁদাবাজি ও হামলার ঘটনা অস্বীকার করে অভিযুক্ত মিরসরাই পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ফরহাদ হোসেন তুহিন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, নির্মাণাধীন ওই ভবনের জমির মালিকানা নিয়ে ঝামেলা রয়েছে। বিরোধপূর্ণ এলাকায় সোলেমান কাজ করছিল। সেই কাজে বাধা দিতেই সোলেমানের লোকজন তাদের ওপর হামলা করে। এতে তার বাম হাতে ভেঙে গেছে। হামলার ঘটনায় প্রবাসী সোলেমানের বিরুদ্ধে তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
