ইবি প্রতিনিধি
নজরুল গবেষক ও দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার সম্পাদক কবি আবদুল হাই শিকদার বলেছেন, ‘ফ্যাসিবাদের আইকন হলো রবীন্দ্রনাথ, যারা রবীন্দ্রনাথ চর্চা করে তারাই দেশদ্রোহী হয়েছে; তারাই দুঃশাসনের আধিপত্য বিস্তার করেছে। তারাই রবীন্দ্রনাথের নামে ৩টা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে। রবীন্দ্রনাথ চর্চা ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে আর মুজিব ছিলেন তার অস্ত্র। রবীন্দ্রনাথের নামে ৫১ হাজার ওয়েবসাইট আছে অথচ নজরুলের নামে আছে মাত্র ১০টা। এদিক থেকে সরকারের উচিত নজরুলকে জাতীয় সম্পদ হিসেবে কাজে লাগানো।’
বুধবার (২১ মে) কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে নজরুল জয়ন্তী-২০২৫ উপলক্ষে বাংলা বিভাগের সহযোগিতায় আয়োজিত সেমিনার ও আলোচনা সভার মূখ্য আলোচক হিসেবে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
এসময় বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মনজুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী ও ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম।
আব্দুল হাই বলেন, ‘হিন্দুদের রেনেসাঁ শুরু হয়েছিল হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। আর বাঙালি রেনেসাঁ শুরু হয়েছিল ১৮৯৯ সালে নজরুলের জন্মের মধ্যে দিয়ে। বেচে থাকার জন্য যেমন প্রয়োজন আলো, বাতাস, খাদ্য ও পানি। ঠিক একসাথে চারটি বিষয়ের সমাগম নজরুলের মধ্যে পাওয়া যায়। দুধের সাথে সাদার যেমন সম্পর্ক; দেহের সাথে রুহের যেমন সম্পর্ক; নজরুলের সাথে বাংলাদেশের তেমন সম্পর্ক।’
তিনি বলেন, ‘নজরুল চিন্তায়ও যেমন ছিলেন তার কর্মেও তেমনটি প্রতিফলন ঘটেছে। তার যে সর্বমানবিকতা বোধ অর্থাৎ নারী-পুরুষ, হিন্দু-মুসলমান সবার ব্যক্তিক ও সামষ্টিক সত্তার সম্মিলনে যে ‘অভেদসুন্দর’ সাম্য সৃষ্টির কথা বলেছিলেন সেটা বিশ্ব সাহিত্যে খুবই গৌরবের। তাইতো তিনি চিরসুন্দর সাম্যবাদী কবি, সাম্যবাদের কবি।’
তিনি আরও বলেন, দেশ থেকে মানবিক বৈষম্য দূর করা দরকার। এখানে নানা বিষয়ে নানা মত-পথ থাক, মানবিক বৈষম্য দূর করতে কবি, বুদ্ধিজীবী, সুশীল, রাজনীতিক, লেখক, সংস্কৃতিকর্মী-সহ সবার এক জায়গায় আসতে হবে। সেই পরিবেশ বজায় রাখতে না পারলে আমরা আবার ভুল পথে হাঁটব। আর এটা হলে তা হবে দেশের নতুন বিপ্লবের আকঙ্খার মৌলিক আদর্শের বিরুদ্ধাচরণ।