শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৫

নতুন ব্রিজ চত্বরে লোকাল বাসের দৌরাত্ম্য

জামশেদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম 
চট্টগ্রাম নগরের পরিবহন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা নেই নতুন ব্রিজ চত্বরে। চট্টগ্রাম শহরে রাস্তায় যেখানে সেখানে গাড়ি পার্কিং এখন রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেন দেখার কেউ নেই বলার কেউ নেই। রাস্তা বড় করা হচ্ছে কিন্তু এর সুফল জনগণ পাচ্ছে না,রাস্তায় দুই পাশে এলোমেলো করে৩/৪ টি গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে। রাস্তায় গাড়ি পার্কিং না করার বিষয়ে আইন থাকলো, আইনেই প্রয়োগ নেই। আছে আইন দেখিয়ে মামলা বাণিজ্য। যদি সঠিক ভাবে আইন প্রয়োক করা গেলে শহরের যানজট থাকবে না।যদি যানজট থাকলো কিছু সময়েক, এই বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের আন্তরিক ভূমিকা পালন করতে হবে। বিশেষ করে ট্রাক, মিনি বাস রাস্তায় পার্কিং করে।নানা অব্যবস্থাপনায় দিনের বেলা রাস্তায় চলাচলে ভোগান্তি তো আছেই, রাতের বেলায়ও এর কমতি নেই।
ঢাকা-কক্সবাজার যাতায়াতের মূল সড়ক কর্ণফুল শাহ আমানত সেতু নতুন ব্রিজ চত্বরে যানজটের কবলে পড়তে হয় যাত্রীদের। কর্মস্থল থেকে বাসায় ফেরার পথে ৫ মিনিটের রাস্তা পার হতে সময় লেগে যায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। চকরিয়া, কক্সবাজার গামী, ঈগল, হানিফ, শ্যামলী মিনি বাস, শাহ আমিন এলাইনসহ মিনি পরিবহন বাসগুলোর রাস্তার ওপর যত্রতত্র পার্কিং করার কারণে এই যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়,দক্ষিণ চট্টগ্রাম জনসাধারণ মানুষের।
প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে লক্ষ অধিক যানবহন এবং পরিবহন। কর্ণফুলী, আনোয়ারা, পটিয়া, বাঁশখালী, সাতকানিয়া, চন্দনাইশ, দোহাজারী, চকরিয়া, কক্সবাজার, বান্দরবানসহ দক্ষিণ চট্টগ্রাম বিভাগের লক্ষ লক্ষ সাধারণ মানুষের প্রতিনিয়ত চলাচলের একমাত্র যাত্রা পথ। নতুন ব্রিজ চত্বরের পূর্ব পাশে সিটি গার্ডেন এর নিছে ও দ্বিতীয় তলায় ঈগল, শ্যামলী মিনি বাস, এলাইন, শাহ আমিন সহ বেশ কিছু পরিবহনগুলোর টিকিট কাউন্টার আছে। এসব কাউন্টারের সামনে দিন ও রাতের বেলা নির্দিষ্ট পার্কিং না থাকায় রাস্তার উপরে সড়ক দখল করে রাখে এসব পরিবহন এর মালিক পক্ষ। গোল চত্বরে যাত্রী তোলার পাল্লা দিয়ে সড়কের উপর থেকে যাত্রী নিতে যায় লাগিয়ে রাখে দীর্ঘ যানজট। বহদ্দারহাট নিদিষ্ট একটি বাস টার্মিনাল থাকলেও সেখানে গাড়ি পার্কিং না করে গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ও মূল সড়কে বাসস্ট্যান্ড গড়ে তুলেছে মালিক সমিতি নামক একটি সংগঠন। মালিক সমিতির বেশ কিছু নেতাকর্মী আওয়ামীলীগে নেতকর্মী হওয়ায় অনেকে মামলার আসামী হয়েছেন ইতিমধ্যে। আওয়ামী সরকার আমলে আওয়ামিলীগ এর দখলে থাকলে এখন হাত বদলে নিয়েছে রাজনৈতিক দলের আরেকটি চক্র। সড়কের উপরে রাখা সকল পরিবহন নির্দিষ্ট সময়ের পর পর ছেড়ে যায় জেলা রুটে চলাচলকারী বাসগুলো। সড়কের উপরে দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠায়। ফলে সৃষ্টি হয় যানজট। নগর থেকে নিজ গন্তব্য লক্ষের পোঁছাতে সকল পরিবহন বের হওয়ার পয়েন্টে যানজটের কবলে পড়তে হয় যাত্রীদের।সড়কে অবৈধ বাসস্ট্যান্ডের কারণে চলাচলকারী নাগরিকদের রাস্তায় আটকে থাকতে হয়। অথচ নিয়ম মেনে টার্মিনাল থেকে সব গাড়ি ছাড়ার ব্যবস্থা করা গেলে নতুন ব্রিজ চত্বরে যানজট অনেকটাই কমে যেত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।নতুন ব্রিজ চবতরে অবৈধ পার্কিং থেকে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। অবৈধ পার্কিংয়ের জন্য প্রতিদিন ট্রাফিক পুলিশ মামলা করেও অবৈধ পার্কিং বন্ধ করা যায়নি। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে স্থানীয় জনসাধারণ।
দক্ষিণ ট্রাফিক বিভাগের ডিসি
চট্টগ্রাম দক্ষিণ ট্রাফিক বিভাগের ডিসি লেয়াকত আলী বলের নতুন ব্রিজ চবতরে সড়কে অবৈধ ভাবে যে বাস গুলো পার্কিং করে রাখে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে জরিমানা করা হয়েছে। সড়কে অবৈধ পার্কিংয়ের ফলে যান চলাচলের গতি কমে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এ জন্য সড়কে অবৈধ পার্কিং দেখলেই আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সার্জেন্টরা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে এবং মামলা দিয়ে জরিমানা করছেন। এসব পরিবহন মালিকরাদের সাথে বেশ কয়েক বসা হলেও তা কোনো সমধান মিলছে না,এবং মিনি বাস রাখার জন্য নির্দিষ্ট জায়গার ব্যবস্থা না থাকা, টার্মিনালগুলোতে বাস রাখার জায়গা অপ্রতুল হওয়ার কারণে এক প্রকার বাধ্য হয়েই তাদের রাস্তার ওপর বাস রাখতে হয়। নির্ধারিত জায়গা বা টার্মিনাল পেলে তারা অবশ্যই রাস্তা থেকে সরিয়ে নেবেন। রাস্তায় বাস রাখলে যেমন যানজট সৃষ্টি হয়, তেমনি তাদের বাসেরও ক্ষতি হয়।

সর্বাধিক পঠিত