
‘আমি বিএনপির বড় নেতা, চাঁদা দিতে হবে না দিলে দোকান বন্ধ!’এমন কথাতেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল কক্সবাজারের রামু বাইপাস সংলগ্ন আল-ফায়সাল এন্টারপ্রাইজ।
অভিযোগ উঠেছে, ফতেখারকুল ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক শাহজাহান কোম্পানি নামে পরিচিত এক ব্যবসায়ী সোমবার দুপুরে মালামাল কিনতে এসে দোকান মালিকের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে তিনি প্রকাশ্যেই চাঁদা দাবি করেন এবং রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে দোকান বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে শাহজাহান কোম্পানি উচ্চস্বরে বলেন, “আমি বিএনপির বড় নেতা, এখনই দোকান বন্ধ করে দিতে পারি!”এমন মন্তব্যে মুহূর্তে এলাকা জুড়ে সৃষ্টি হয় উত্তেজনা।
আল-ফায়সাল এন্টারপ্রাইজের মালিক জানান, সামান্য বিলম্বে মালামাল সরবরাহ হওয়ায় শাহজাহান ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে ভয় দেখান। “তিনি সরাসরি চাঁদা চান এবং বলেন আমি না দিলে ব্যবসা করা কঠিন হবে,” বলেন দোকান মালিক।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “রাজনৈতিক পরিচয় এখন যেন নতুন ব্যবসার মূলধন। দলীয় পদ থাকলেই কেউ কেউ ভাবেন, সবকিছু তাদের হাতের মুঠোয়।”
এক ব্যবসায়ী ব্যঙ্গ করে বলেন, “চাঁদা না দিলে দোকান বন্ধ— এমন হুমকি শুনে বুঝলাম রাজনীতি এখন চাঁদাবাজির নতুন নাম।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শাহজাহান কোম্পানির বিরুদ্ধে আরও নানা অভিযোগ রয়েছে। বিএনপি নেতা পরিচয়ে থাকলেও তিনি এলাকায় ‘আওয়ামী লীগের মধু খাওয়া লোক’ হিসেবে পরিচিত।
২০২২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি সাইমুম সরওয়ার কমলের নির্দেশে তিনি প্রীতিভোজের আয়োজন করেন।
এছাড়া বিগত কয়েকটি নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতীকের পক্ষে এজেন্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন বলে স্থানীয়রা জানান।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে ফতেখারকুল ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক শাহজাহান কোম্পানি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি বিএনপি পরিচয়ে কিছু বলিনি। দোকান মালিকের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে, আমি তাকে ফোন করে বিষয়টি জানিয়েছি।”
স্থানীয় ব্যবসায়ী মহল বলছে, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এমন ভয়ভীতি প্রদর্শন মুক্ত বাজার পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি। তারা দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন।
