শনিবার, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৫

২২ হাজার কোটির নতুন মহাসড়ক বানাচ্ছে ভারত: বাংলাদেশের ওপর নির্ভরতা কমাতে বড় পরিকল্পনা

চিটাগং ট্রিবিউন ডেস্ক

ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর জন্য বাংলাদেশের ভূখণ্ড ‘সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক’—নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এমন মন্তব্যের পরই সাড়া পড়ে গেছে ভারতের কূটনৈতিক ও অবকাঠামো মহলে। ফলস্বরূপ, বাংলাদেশের ওপর নির্ভরতা কমাতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ২২ হাজার ৮৬৪ কোটি রুপি ব্যয়ে শিলং থেকে শিলচর পর্যন্ত চার লেনবিশিষ্ট নতুন মহাসড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
এই মহাসড়কটি ১৬৬.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ হবে এবং এটি উত্তরপূর্ব ভারতের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে হিসেবে গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছে ভারতের জাতীয় মহাসড়ক ও অবকাঠামো উন্নয়ন কর্পোরেশন লিমিটেড (NHIDCL)। ২০৩০ সালের মধ্যে এ প্রকল্প সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।’

গত মার্চে চীন সফরে গিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো স্থলবেষ্টিত হওয়ায় সমুদ্রপথে যোগাযোগের জন্য একমাত্র কার্যকর পথ হলো বাংলাদেশ। একইসঙ্গে তিনি চীনা অর্থনীতির সম্প্রসারণে বাংলাদেশের ভূমিকাকেও গুরুত্বপূর্ণ বলে অভিহিত করেন। এই মন্তব্যের পর ভারতের পররাষ্ট্র নীতিতে নতুন দিক নির্দেশনা তৈরি হয়।

শিলং-শিলচর এক্সপ্রেসওয়ের মাধ্যমে ত্রিপুরা, মণিপুর, মিজোরাম ও আসামকে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে আরও শক্তভাবে যুক্ত করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। বর্তমানে ‘চিকেন নেক’ হিসেবে পরিচিত শিলিগুড়ি করিডরই একমাত্র স্থলপথ।

এছাড়া ভারত মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের কালাদান মাল্টি মোডাল প্রজেক্টেও বিনিয়োগ করছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে কলকাতা বন্দরকে মিয়ানমারের সিত্তে বন্দর এবং সেখান থেকে জোরিনপুই (মিজোরাম) পর্যন্ত সংযুক্ত করা হবে নদীপথ ও সড়কপথে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিলং-শিলচরের মহাসড়ক নির্মাণ ভারতের জন্য সহজ হবে না। কারণ এলাকা পাহাড়ি হওয়ায় সেখানে ভূমিধসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি রয়েছে। তা সত্ত্বেও, ভারতের পরিকল্পনা স্পষ্ট—উত্তরপূর্বাঞ্চলের সঙ্গে সংযোগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভূখণ্ডের বিকল্প খুঁজে বের করা।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই অবকাঠামোগত পরিবর্তন বাংলাদেশের জন্য সতর্ক হওয়ার বার্তা বহন করে। আঞ্চলিক বাণিজ্য, নিরাপত্তা ও ভূ-রাজনীতির দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের এই পদক্ষেপ আঞ্চলিক ভারসাম্যে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে

সর্বাধিক পঠিত