শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৫

অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের মেয়াদউত্তীর্ণ, মারাত্মক ঝুঁকিতে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

এস এম জুবাইদ,পেকুয়া 
পেকুয়ার দুই লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসার জন্যে একমাত্র সরকারী স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। আর এ হাসপাতালের অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থার নাজুক অবস্থা। আছে মাত্র শুধু নামে আর কাগজে কলমে বাস্তবে নেই কোন কার্যকর।
গতকাল হাসপাতালে গেলে এ এন সিডি কর্ণারের সামনে দেওয়ালে লাগানো অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রটি চোখে পড়ে। আর যন্ত্রের গায়ে লেখা আছে মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ ২০২৪ সাল। এখন চলে ২০২৫ সালে ফলে ওই অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের রাসায়নিকের মেয়াদ ৪ মাস আগে শেষ হয়ে গেছে। তারপরও এ যন্ত্রের উপর ঝুকি ভর করে চলে এ হাসপাতাল। অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের রাসায়নিকের মেয়াদ যে শেষ হয়ে গেছে তা জানেন না কর্তৃপক্ষ। অগ্নিনির্বাপনে ফায়ার অ্যালার্মসহ আর যেসব অবকাঠামোর দরকার সেগুলোর কোনো ব্যবস্থাই নেই এ হাসপাতালে। তাছাড়া ও বৈদ্যুতিক বহু পুরনো ওয়্যারিং গুলোর উপর চলছে ভারি এসব যন্ত্রপাতি। আবার অনেক রুমে নেই অগ্নিনির্বাপক এ যন্ত্রটি। ফলে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯৮ সালে সৌদিআরব সরকারের অর্থায়নে নির্মিত ২০ শয্যা হাসপাতালটি
দীর্ঘদিন প্রকল্পের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে আসছিলো। সম্প্রতি বিগত চারদলীয় জোট সরকার আমলে এ হাসপাতালের অবকাঠামো উন্নয়ন এবং ৩১ শয্যায় রূপান্তরিত হয়। আ’লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে এ হাসপাতালকে ৫০ শয্যায় রূপান্তরিত করলে তা শুধু কাগজে কলমে রূপান্তরিত হয়েছে। হাসপাতালে বাড়েনি রোগীর ছিট এবং জনবল। তারপরও এ হাসপাতালে প্রতিদিন শতশত রোগী এ কর্ণারে চিকিৎসা নিতে আসে। চিকিৎসকসহ স্টাফ রয়েছেন অর্ধ শতাধিক। পাশাপাশি প্রতিদিন দেড় হাজারেরও বেশী রোগী হাসপাতালে আসেন। এমন একটি হাসপাতালের অগ্নিদুর্ঘটনায় একমাত্র ভরসা অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রটি। এটার রাসায়নিক মেয়াদোত্তীর্ণ। এছাড়াও প্রায় ২০ বছরের পুরনো হাসপাতাল ভবনের অধিকাংশ বৈদ্যুতিক তার সংস্কার না করেই ব্যবহার করা হচ্ছে এসিসহ ভারি চিকিৎসা যন্ত্রপাতি। শর্টসার্কিটে যে কোনো সময় আগুন ধরে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

হাসপাতালের অগ্নিনির্বাপকের রাসায়নিক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান পেকুয়া ফায়ার ফাইটিং ইকুইপমেন্টের সত্বাধিকারী আবুল কালাম আজাদ বলেন, পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ২০টি অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র সরবরাহ করা হয়েছে। কিন্তু ৪ মাস আগেই অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের রাসায়নিকের মেয়াদ শেষ হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেছি কিন্তু বাজেট না পাওয়ায় রাসায়নিক নেয়নি।
পেকুয়া ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ইনচার্জ শফিউল আলম বলেন, পেকুয়া সরকারী হাসপাতালসহ অন্যান্য হাসপাতালগুলোতে অগ্নিকান্ডের ঝুঁকিতে আছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জলাধার নির্মাণ, ফায়ার অ্যালার্ম যন্ত্র স্থাপনসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হলেও কাজ হয়নি।
এ বিষয়ে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুজিবুর রহমান অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের মেয়াদ উত্তীর্ণের কথা স্বীকার করেন এবং বলেন হাসপাতালে অগ্নিকান্ড রোধে আধুনিক সরঞ্জামের সংকট আছে।

সর্বাধিক পঠিত