চিটাগং ট্রিবিউন ডেস্ক

সাদিয়া আয়মান। তারকা অভিনেত্রী ও মডেল। ‘উৎসব’ সিনেমার পর আবার তিনি দর্শক প্রশংসা কুড়াচ্ছেন ওয়েব সিরিজ ‘অন্ধ বালক’, একক নাটক ‘খুঁজি তোকে’ ও ‘অপ্রেমিক’-এ অভিনয় করে। অভিনয়ে নিজস্ব ভাবনা ও অন্যান্য বিষয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন রাসেল আজাদ বিদ্যুৎ   

ওয়েব সিরিজ ‘অন্ধ বালক’ দর্শক মনোযোগ কেড়েছে। এখন আলোচনায় নাটক ‘খুঁজি তোকে’ ও ‘অপ্রেমিক’। এমন কিছু হতে পারে, ভেবেছিলেন? 

কোন কাজ দর্শক মনে কতটা ছাপ ফেলবে, এটা তো অনুমান করা কঠিন। তাই কাছাকাছি সময়ে এতগুলো কাজে দর্শক মাঝে সাড়া পাওয়ায় বিস্ময় আর আনন্দ মিলেমিশে এক হয়ে গেছে। এটাও সত্যি যে, এ কাজগুলো যখন হাতে নিই, তখন আশা ছিল, এবারের সিরিজ ও নাটকগুলো দর্শকের কাছে কিছুটা হলেও ভিন্ন রকম মনে হবে। কারণ প্রতিটি কাজ অনেক বাছবিচার করে হাতে নেওয়া। ‘অন্ধ বালক’ সিরিজের কথাই বলি, এটি নির্মাতা ভিকি জাহেদ। অভিনেতা তৌসিফ মাহবুব ও আমার একসঙ্গে প্রথম কাজ; যেখানে আমরা ভালোবাসার একটি গল্পকে আলাদা দৃষ্টিকোণ থেকে তুলে ধরেছি। আবার ‘অপ্রেমিক’ নাটকে যে গল্প ও চরিত্র তুলে আনা হয়েছে, সেখানে খুঁজে পাওয়া যায় চেনা মানুষের ছায়া।

এর চরিত্রে ভিন্নতা না থাকলেও গল্প উপস্থাপনে নতুনত্ব যোগ করার চেষ্টা করা হয়েছে। এটি এক ধরনের মিউজিক্যাল ড্রামা, যার ইতি টানা হয়েছে অসমাপ্ত প্রেম দিয়ে। অন্যদিকে ‘খুঁজি তোকে’ নাটকেও দর্শক ইয়াশ রোহানকে আনকোড়া এক চরিত্রে আবিষ্কার করতে পেরেছেন। চরিত্র একদম অন্য রকম, এমন বলা যাবে না। তার পরও এই কাজটি বেছে নিয়েছি এর প্রোডাকশন ডিজাইন ভালো লাগার কারণে।

আগের তুলনায় এই সময়ে টিভি নাটকে কম দেখা যাচ্ছে, এর কারণ কী?

বোহেমিনায় ঘোড়া’ ওয়েব সিরিজ আর ‘উৎসব’ সিনেমার জন্যই কয়েক মাস টিভি নাটকে অভিনয় করিনি। যেজন্য মাঝের সময়টায় আমাকে টিভি নাটকে সেভাবে দেখা যায়নি। এতে কিছু মানুষ ভেবেছিলেন, সাদিয়া আয়মান বোধহয় টিভি নাটক থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। তবে সেই ভুল ভাঙতে খুব একটা সময় লাগেনি।

যে কাজের জন্য টিভি নাটকে বিরতি নিয়েছিলেন, সেগুলো আপনার শিল্পী সত্তাকে কতটা খুশি করতে পেরেছে?
‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’ আর ‘উৎসব’-এর অভিনয় জার্নিটা আমার জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এই সিরিজ ও সিনেমায় অভিনয় করে শুধু দর্শকের যে ভালোবাসা পেয়েছি, তা কখনও ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়। শুধু জনপ্রিয়তার জন্য নয়, অভিনয়ে নতুন অনেক কিছু শিখতে পারার কারণেও এই কাজ দুটি ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট হয়ে উঠেছে।

‘কাজল রেখা’ ও ‘উৎসব’-এর মতো সিনেমায় অভিনয় করে দর্শক মনোযোগ কেড়েছেন। এখন কি আশা করা যায়, বড়পর্দায় নিয়মিত দেখা যাবে?   

সিনেমায় নিয়মিত অভিনয়ে আপত্তি নেই। এর মধ্যে নতুন বেশ কিছু সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাবও পেয়েছি। বেশির ভাগ কাজ ফিরিয়ে দিতে হয়েছে। সেই সিনেমাগুলো যে ভালো হবে না– এমন বলছি না। মনে হয়েছে, যেসব চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, সেগুলো আমার বদলে অন্য কেউ পর্দায় তুলে ধরলে মানানসই হবে। তা ছাড়া সিনেমায় অভিনয় নিয়ে এতটা তাড়াহুড়ো নেই। মাত্র তো তিন বছরের অভিনয় ক্যারিয়ার, সামনে অনেক পথ পড়ে আছে। তাই নিজে যে ধরনের কাজ করতে চাই, তাঁর জন্য অপেক্ষায় থাকতে রাজি আছি। প্রত্যাশামাফিক কাজের সুযোগ কখনও না কখনও আসবেই– এটাই আমার বিশ্বাস।

খায়রুল বাসারের সঙ্গে জুটি গড়ে সাড়া ফেলেছিলেন। এখন কারও সঙ্গে সেভাবে জুটি গড়ে না ওঠার কারণ কী বলে মনে হয়? 

জুটি গড়ে ওঠে দর্শকের চাহিদার কারণে। প্রথম কোনো একজন পরিচালক একটি জুটি দর্শকের সামনে তুলে ধরেন। সেই জুটি যখন অনেকের মনে ছাপ ফেলে তখন অন্য নির্মাতারা একনাগাড়ে তাদের নিয়ে কাজ করেন। অভিনয়ের শুরুর দিকে আমার আর খায়রুল বাসারের জুটি অনেকে পছন্দ করেছেন। এজন্য একের পর এক নির্মাতা আমাদের নিয়ে কাজ করেছেন। এমন নয় যে, আমরা অন্যান্য অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সঙ্গে অভিনয় করে দর্শক সাড়া পাইনি। সাড়া পেয়েছি, এখনও পাচ্ছি। কিন্তু সত্য এটাই, প্রথম যা ভালো লেগে যায়, সেটাই দর্শক মনে বেশি মনে রাখেন।

অন্যান্য তারকার মতো আপনাকে নিয়ে অনেক গুজব-গুঞ্জন শোনা যায়। সেটি সত্য বা মিথ্যা যেটাই হোক, শিল্পী বা ব্যক্তিজীবনে প্রভাব ফেলে?

তারকাদের নিয়ে অনেক গুজব রটে। প্রতিনিয়ত নানা রকম গুঞ্জন শোনা যায়। সেটি ইতিবাচক বা নেতিবাচক যেমনই হোক, কিছুটা হলেও ইমোশনাল করে দেয়। যদিও নিজেকে তারকা না ভেবে সাধারণ মানুষের কাতারেই রাখি। তাই অযৌক্তিক কথা অনুভূতিতে কোনো না কোনো ছাপ রেখে দেয়। তার পরও ‘অভিনয় জীবনে গুজব-গুঞ্জন থাকবেই’ এই কথাটি মেনে নেওয়ার চেষ্টা করছি।