শনিবার, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৫

ঈদগাঁওর পলাতক আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নিয়ে সৌদি আরবে সরকার বিরোধী কর্মকান্ড চালাচ্ছে সামশুল আলম

নিজস্ব প্রতিবেদক
কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার পলাতক আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাদের জামাই আদরে সৌদি আরবে আশ্রয় দিচ্ছে প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা শামসুল আলম। পবিত্র মক্কা নগরীসহ সৌদি আরবের বিভিন্ন এলাকায় নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী-ছাত্রলীগের দলীয় কার্যক্রম ও সরকার বিরোধী কর্মকান্ডসহ দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র চলছে তার নেতৃত্বে। বিভিন্ন মামলার পলাতক আসামী আওয়ামী লীগ যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নিয়ে সৌদি আরবের বিভিন্ন শহরে তার নেতৃত্বে সরকার বিরোধী মিটিংয়ের ছবি – ভিডিও ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার ওয়ারেন্টবুক্ত প্রধান আসামী এই শামসুল আলম পোকখালী ইউনিয়নের পশ্চিম গোমাতলী এলাকার আবদুল করিমের ছেলে । গত বছর আওয়ামী লীগের টিকেটে ঈদগাঁও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হয় শামসুল আলম।
নির্বাচনের দিন পোকখালী এলাকায় তাকে গণধোলাই দেয় আওয়ামী লীগেরই অপর একটি গ্রুপ। এরপর রাতের অন্ধকারে সৌদি আরব পালিয়ে যায় সে।
অনুসন্ধানে প্রকাশ, ২০২৪ সালে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী আন্দোলনোর সময় জুলাই বিপ্লব ঠেকাতে ঈদগাঁওতে সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নামে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ ক্যাডাররা।
এলাকাবাসী জানান, ছাত্র জনতার বিপ্লবের শেষ পর্যায়ে ২০২৪ সালের ৩ ও ৪ আগস্ট ঈদগাঁও বাস স্টেশনে ছাত্র জনতার উপর হামলা ও গুলিবর্ষণ করে তারা।
এসব কর্মকাণ্ডে সৌদী আরব থেকে সরাসরি অর্থায়ন করে উপরোক্ত শামসুল আলম।
তার ইন্ধন ও অর্থায়নে ঈদগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু তালেব, সেক্রেটারী ইমরুল রাশেদ, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আহমদ করিম সিকদার, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ইরফানুল করিম, জালালাবাদ ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি শাহেদ কামাল, সাবেক এমপি কমলের পিএস পরিচয় দানকারী যুবলীগ নেতা লাল মিজান, কলেজ ছাত্র লীগ আহবায়ক ও মোটর সাইকল চোর সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রক মীর আবদুর রহমান নাহিদ, ছাত্রলীগ নেতা টোকাই কাজী আবদুল্লাহ ও ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা মাহবুব প্রমূখের নেতৃত্বে আওয়ামী ছাত্রলীগ ক্যাডাররা সেসময় বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকারী ছাত্র জনতার উপর হামলা ও গুলিবর্ষণ করে।
কিন্তু গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে উপরোক্ত আওয়ামী যুবলীগ ক্যাডাররা ঈদগাঁও থেকে পালিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় আত্নগোপন করে।
হত্যা, গুলিবর্ষন ও আন্দোলনে বাঁধা দেয়ার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে তাদের বিরুদ্ধে এমামলা হলে পুলিশ এদের ধরতে অভিযান শুরু করে। কিন্তু গ্রেফতার থেকে বাঁচাতে বিপুল টাকা খরচ করে পর্যায়ক্রমে তাদের সবাইকে সৌদী আরব নিয়ে যায় উপরোক্ত শামসুল আলম।
প্রবাসীরা জানান, পলাতক এসব সন্ত্রাসীদের সবাইকে সেখানে চাকুরী ও ব্যাবসার সুযোগ করে দেয় সে। সামশুল আলমের নেতৃত্বে সেখানে বসে দেশ ও সরকার বিরোধী বিভিন্ন কর্মকান্ড পরিচালনা করছে তারা।
গত কয়েকদিন আগেও উপরোক্ত সব পলাতক সন্ত্রাসীদের নিয়ে মক্কা নগরীতে তথাকথিত শোক দিবস পালনের আয়োজন করে সে। এতে সরকার ও রাষ্ট্র বিরোধী বক্তব্যসহ আওয়ামী লীগকে ফেরানোর শপথ নেয় তারা।
প্রবাসীরা জানান, বিতর্কিত এই শামসুল আলমের সাথে জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের কতিপয় কর্মকর্তার দহরম মহরম সম্পর্ক রয়েছে। তার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এসব কর্মকর্তা উপস্থিত থাকেন।
জেলা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, শামসুল আলমসহ উপরোক্ত সব পলাতক আসামী মোস্ট ওয়ান্টেড। তাদের যেখানে পাওয়া যায় সেখানে গ্রেফতার করা হবে।

সর্বাধিক পঠিত