
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিচারিক আদালত ও হাইকোর্টের রায় বাতিল করেছেন আপিল বিভাগ। এর ফলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ১০ বছরের কারাদণ্ড থেকে খালাস পেয়েছেন। একই সঙ্গে আপিল করতে না পারলেও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অন্যান্য আসামিদেরও খালাস দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি), প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ রায় দেন। চার কার্যদিবস শুনানি শেষে এদিন রায় ঘোষণা করা হয়।
আইনজীবীদের উপস্থিতি:
খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান খান, অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন, অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ প্রমুখ।
অন্যদিকে, দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আসিফ হোসাইন এবং রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক।
আদালতের পর্যবেক্ষণ:
আদালত তাদের পর্যবেক্ষণে বলেন, প্রতিহিংসামূলক মনোভাব থেকে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়েছিল।
মামলার পটভূমি:
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক আখতারুজ্জামান জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ড এবং অন্য পাঁচ আসামিকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন।
অন্য আসামিরা হলেন:
সাবেক মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী
সাবেক এমপি ও ব্যবসায়ী কাজী সালিমুল হক কামাল
ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ
জিয়াউর রহমানের ভাগনে মমিনুর রহমান
তাদের প্রত্যেককে ২ কোটি ১০ লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়।
আপিলের ধাপসমূহ:
১. বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন খালেদা জিয়া।
২. ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর, হাইকোর্ট তার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়।
৩. এরপর খালেদা জিয়া হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ-টু-আপিল করেন, যা দীর্ঘদিন ঝুলে ছিল।
৪. ২০২৪ সালের ১১ নভেম্বর, আপিল বিভাগ খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করেন এবং আপিলের অনুমতি মঞ্জুর করেন।
শেষপর্যন্ত, আপিল বিভাগে এ মামলার চূড়ান্ত রায় প্রদান করা হয়, যেখানে বিচারিক আদালত ও হাইকোর্টের রায় বাতিল করা হয়।
