শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৫

বৃষ্টিতে যানজট-ভোগান্তি জনসাধারণ মানুষ

মোহাম্মদ জামশেদুল ইসলাম

চট্টগ্রাম শহরে বুধবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত মাত্র তিন ঘণ্টার মধ্যে ৮৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে, যা অতি ভারী বৃষ্টির মধ্যে পড়ে। এই ভারি বৃষ্টিতে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ফলে শহরজুড়ে যানজট ও চলাচলে বড় ধরনের ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে।

বুধবার (১৮ জুন) বৃষ্টিতে নগরের আগ্রাবাদ, কাতালগঞ্জ, জিইসি মোড়, কাপাসগোলা, বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, ষোলশহর, হালিশহরসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক ও আবাসিক এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এসব এলাকায় সড়ক ও রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ ও অফিসগামীদের চলাচল ব্যাহত হয়েছে। নগরের চৌমুহনী, বাকলিয়া, রাহাত্তারপুল ও জিইসি মোড়ের মতো এলাকায় পানির জোগান নষ্ট হওয়ায় অফিসগামী ও যাত্রীরা বিপাকে পড়েছেন।চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে মোট ১০৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ পরিস্থিতি আগামী কয়েকদিন অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ মৌসুমি বায়ু সক্রিয় রয়েছে এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে, যা ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের কারণ হিসেবে কাজ করছে।নগরের কাতালগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা সাইফুর রহমান জানান, বৃষ্টি কম হোক বা বেশি, কাতালগঞ্জে নিয়মিত পানি ওঠে। শহরের অনেক জায়গায় এখন জলাবদ্ধতা হয় না, কিন্তু কাতালগঞ্জে বর্ষায় পানি জমা হয়ে যাওয়া একদম স্বাভাবিক ব্যাপার।

সকালে বাসা থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রাস্তায় পানির স্তর চোখে পড়ে।আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকার এক বেসরকারি কর্মকর্তা সোহেল চৌধুরী বলেন, আজকের অতি ভারী বৃষ্টির কারণে পানি জমা হয়েছে, যা খুব স্পষ্ট। কিন্তু গতকালও এই এলাকায় জলাবদ্ধতা হয়েছিল, যদিও শহরের অন্যত্র তখন এমন পরিস্থিতি ছিল না। বৃষ্টির সময় এই এলাকায় গাড়ি চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়, ফলে মানুষের যাতায়াতে বিঘ্ন ঘটে।নগরীর দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা সমস্যা দূর করতে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) বিভিন্ন বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে সিডিএর মেগা প্রকল্পসহ মোট চারটি প্রকল্পের মাধ্যমে নগরীর পানির নিকাশা উন্নত করার কাজ চলছে, যার জন্য মোট বাজেট ধরা হয়েছে ১৪ হাজার ৩৯৯ কোটি টাকা।

এই প্রকল্পগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় একটি হচ্ছে ৩৬টি খালের খনন ও সংস্কার, যার জন্য আলাদা বাজেট হিসেবে বরাদ্দ রয়েছে ৮ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা। এই প্রকল্পের কাজের মেয়াদ আগামী বছরের জুন মাসে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।এখন পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি প্রায় ৮৪ শতাংশে পৌঁছেছে। ৩৬টি খালের মধ্যে ২৫টির কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে, আর ছয়টি খালের কাজ ৯০ শতাংশের বেশি সম্পন্ন। বাকী পাঁচটি খালের কাজ এখনও ৯০ শতাংশের নিচে রয়েছে।তবে নগরীর কাতালগঞ্জ, পাঁচলাইশ ও মুরাদপুর এলাকায় অবস্থিত হিজড়া খালের খনন ও সংস্কার কাজ এখনও শেষ হয়নি। এই খালটির অবস্থা এখনও সংকটজনক।অন্যদিকে, আগ্রাবাদ এলাকায় জলাবদ্ধতার বড় কারণ হিসেবে দায়ী করা হচ্ছে প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ বক্স কালভার্টের ভিতরে জমে থাকা আবর্জনা ও ময়লা। বর্তমানে ওই খালটির পরিষ্কারের কাজ চলমান রয়েছে বলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন জানিয়েছে।

সর্বাধিক পঠিত