সড়কের সংস্কার কাজ ১ বছর ধরে বন্ধ সড়কের উপর যেনো মিনি পুকুর! জনদূর্ভোগ চরমে

এস এম জুবাইদ, পেকুয়া
সড়কের সংস্কার কাজ দীর্ঘ এক বছর ধরে বন্ধ হয়ে আছে। সড়কের সংস্কার কাজ ফেলে ঠিকাদার লাপাত্তা হয়ে যায়। বর্তমানে ওই সড়কটির বেহাল দর্শায় পরিণত হয়েছে। পুরো সড়কজুড়ে রয়েছে খানাখন্দের ভরপুর। ফলে বেড়েছে জনদূর্ভোগ চরমে। এমন করুন দৃশ্য দেখা যায় কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার মগনামার প্রধান সড়কে। যেটি মগনামা হাইস্কুল সড়ক নামে পরিচিত।
গতকাল সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, মগনামা ফুলতলা বিছমিল্লাহ রোড় থেকে মগনামা হাইস্কুল হয়ে কইড়া বাজার পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার সড়ক জুড়ে খানাখন্দে ভরে যায়। এছাড়াও সামান্য বৃষ্টির পানি সড়কের উপর সৃষ্ট গর্তে জমে গিয়ে মিনি পুকুরে রূপান্তর হয়েছে। সড়কের ঠিকাদারের শ্রমিকদের দেওয়া কংকরের কারণে গাড়ি চলাচলে হিমশিম খাচ্ছে যাত্রী ও গাড়ী চালকরা। রাস্তার উপর মিনি পুকুর হওয়ায় অনেক সময় গাড়ী পড়ে অনেকই আহত হচ্ছেন। বিশেষ করে রাতের বেলা গাড়ী নিয়ে চলাচলে চরম দূর্ভোগে পড়ে যাত্রী ও চালকরা। এমনকি ওই সময়ে অনেকই গুরুত্বর আহত হয়েছে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, মগনামার প্রধান সড়কটির সংস্কার কাজ দীর্ঘ এক বছর ধরে বন্ধ থাকায় হাজারো মানুষকে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এটি মগনামা ইউনিয়নের প্রধান সড়ক হওয়ায় পুরো ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অভ্যন্তরীন সড়কগুলো এ সড়কে সংযোগ হওয়ায় প্রতিদিন হাজার হাজার লোক যাতায়াত করছে এ সড়ক দিয়ে। এ সড়কের উপর একমাত্র ভরসা তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুইটি হাইস্কুল, একটি মাদ্রাসা, কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাসহ শত শত যানবাহন চলাচল করে। খোয়ার উপর দিয়ে যানবাহন চলা খুব কষ্টসাধ্য বিষয়। এমনকি হেঁটে চলাও দূস্কর হয়ে পড়ছে। তারা আরো জানান, সড়কটি প্রথমধাপে মিয়াজিপাড়া থেকে বেদরবিল পাড়া পর্যন্ত খোলা হয়েছে। ঠিকাদার কোনমতে ম্যাগাডার্মর কাজ করে সিসি ঢালাই না দিয়ে লাপাত্তা হয়ে যায়। রাস্তার দুইপাশে গাইডলাইন ঢালায়ের জন্য রিভাইজ আবেদন করে বলে ও জানা যায়। টমটম সিএনজি ও লবণ বোঝাই গাড়ী চলাচলে বর্ষায় গর্তে সৃষ্টি হয়। ফলে রোগী, বয়োবৃদ্ধ এবং গর্ভবর্তী মহিলাদের ভোগান্তির থাকে না।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়,মগনামা ফুলতলা বিছমিল্লাহ রোড় থেকে মগনামা হাইস্কুল হয়ে কইড়া বাজার পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে ৪ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়।
সংশ্লিষ্ট দপ্তর দরপত্র আহবান করলে আসাদ এন্টারপ্রাইজ নামের এক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি পায়। পরে কাজ শুরু করে ওই ঠিকাদার।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কথিত আসাদ এন্টারপ্রাইজ নামের ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি গত আ’লীগ সরকার আমলে কৌশলে বিভিন্ন উপজেলার সংস্কার কাজ ভাগিয়ে নেন। কাজ শুরু করে ম্যাগাডার্মর কাজ করে সিসি ঢালাই না দিয়ে লাপাত্তা হয়ে যায় ওই ঠিকাদার। এ সড়কের সংস্কার কাজটি দীর্ঘ এক বছর ধরে বন্ধ থাকলেও কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় বাসিন্দা মমতাজুল হক জানান, এ সড়ক দিয়ে আমরা খুব কষ্ট নিয়ে চলাচল করি। রোগী ও কোন মুমূর্ষু রোগী কিংবা ডেলিভারিজনিত মহিলাদের কে হাসপাতালে নিয়ে যেতে খুবই ভোগান্তি পোহাতে হয়। যানবাহন চলা তো দূরের কথা হেঁটে চলাও কষ্ট সাধ্য। এ সড়কে চরম দূর্ভোগে আছি। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি দ্রুত যেনো এ সড়ক সংস্কার করে এ এলাকার মানুষের দূর্ভোগ কমানো হয়।
কাজিমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ী আলম জানান, দোকানের মালামাল আনতে খুব কষ্ট হয় এ সড়ক দিয়ে। রাস্তা সংস্কারের কাজ করার আগের চেয়ে এখন আরো বেশি খারাপ অবস্থা পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন পথচারীসহ গাড়ীর চালকরা ছোটবড় দূর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের পেকুয়া উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী শাহ জালাল জানান, ওই সড়কের রিভাইজেশন জন্য আবেদন দীর্ঘ দিন আটকে থাকলেও বর্তমানে ছাড় দেওয়া শুরু হয়েছে। ছাড় পাওয়া মাত্রই কাজ শুরু হবে।